<< আফগানদের আশ্রয়ের অনুরোধ যুক্তরাষ্ট্রের, ঢাকার ‘না’

দেশত্যাগে ইচ্ছুক কিছু আফগানকে বাংলাদেশে সীমিত সময়ের জন্য আশ্রয় দিতে অনুরোধ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে ঢাকা ওয়াশিংটনকে সাফ জানিয়ে দিয়েছে, বাংলাদেশের পক্ষে একজন লোককেও আশ্রয় দেওয়া সম্ভব নয়।

সোমবার (১৬ আগস্ট) রাতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এ তথ্য জানান।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, আমাদের দেশে তো বহু রোহিঙ্গা রেখেছি, এ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র আমাদের সাহায্যও করছে। তারা বলেছে, তাদের অনেক বন্ধু আফগানিস্তানে আছে, তারা তাদের অন্য দেশে সরাতে চায়। এটা খুব জরুরি ইস্যু। বাংলাদেশ যদি ওদের স্বল্পদিনের জন্য আশ্রয় দেয় তারা খুব খুশি হবে।’

মন্ত্রী বলেন, ‘এর জবাবে আমরা বলেছি, তোমরা আমাদের কথা চিন্তা করেছ সেটা ভালো খবর। কতগুলো লোককে তোমরা সরিয়ে নেবে? ওদের কতদিন রাখবে? কোন কোন দেশকে তোমরা অনুরোধ করেছ? দেখ আমরা বড় কষ্টে আছি। আমাদের এখানে এত জায়গা নেই। অর্থনীতি অত ভালো না। সুতরাং আমরা আর একটা লোকও নিতে পারব না। আমাদের সেই অবস্থান নেই।’

জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম শহীদুল ইসলামের মাধ্যমে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এমন প্রস্তাব পাঠায় যুক্তরাষ্ট্র। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে রোববার (১৫ আগস্ট) রাতেই রাষ্ট্রদূতের মাধ্যমে জবাব পাঠায় ঢাকা।

সোমবার ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার একই প্রস্তাব নিয়ে আসেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। এ নিয়ে পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে বৈঠকও করেন মিলার। সেখানে মিলারকে সচিব সাফ জানিয়ে দেন, বাংলাদেশের পক্ষে আর একটি লোককেও নেওয়া সম্ভব হবে না।

এ প্রসঙ্গে ড. মোমেন বলেন, ‘আজ সকালে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত এসেছিলেন। সচিবের সঙ্গে আলাপ করেছেন। ওনাকেও (রাষ্ট্রদূত) একই কথা বলে দেওয়া হয়েছে।’

এদিকে, বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, তালেবান আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল দখলের পর দেশত্যাগ করতে শহরটির বিমানবন্দরের দিকে ছুটছেন হাজার হাজার মানুষ। এমনকি বিমানের চাকায় ঝুলেও অনেকে পালানোর চেষ্টা করছেন। সোমবার বিকেলে বিমান থেকে ছিটকে পড়ে অন্তত তিনজন মারা গেছেন। এছাড়া বিমানবন্দরে হুড়োহুড়িতে ৫ জন মারা যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

তালেবানহীন ২০ বছরে আফগানিস্তানে যারা সরকার ও মার্কিন বাহিনীর সঙ্গে কাজ করেছেন, যারা খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিলেন এবং যারা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন তারা সবাই তালেবানের হাতে মৃত্যু অথবা নির্যাতনের আতংকে আছেন এবং এজন্য সবাই দেশ ছাড়তে চান।