পৃথিবীর গভীরে আরও এক মহাসাগরের সন্ধান মিলেছে। এই গ্রহের বুকজুড়ে ছড়িয়ে থাকা পাঁচ মহাসাগরের কোনোটির চেয়ে এটির ব্যাপ্তি কম না।
তাৎপর্যের বিষয় হলো- আমাদের জানা মহাসাগরগুলোকে আমরা দেখতে পাই। কারণ সেগুলো আছে পৃথিবীর উপরিভাগে। নতুন আবিষ্কৃত মহাসাগরের অবস্থান পৃথিবীর গভীরে।
জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্টের গোয়েথে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট ফর জিওসায়েন্সেসের একদল গবেষক সম্প্রতি বিরল এক হীরার ওপর গবেষণা চালিয়ে নতুন মহাসাগরের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়ার দাবি করেছেন। তারা বলছেন, পৃথিবীর একেবারে উপরের আবরণ (mantle) ও কেন্দ্রের মধ্যবর্তী একটি স্তরের মধ্যে লুকিয়ে আছে এটি।
‘বাকি পাঁচটি মহাসাগর যেখানে উপরের আবরণের মধ্যে অবস্থিত, সেখানে ৬ নম্বরটি তার নিচে। এ কারণে এটির অস্তিত্ব এতদিন টের পাওয়া যায়নি।’
গবেষকরা বলছেন, দুই আবরণের মধ্যবর্তী স্তরে পাথরের মাঝে আটকে আছে বিপুল জলরাশি, যা কোনো মহাসাগরের চেয়ে কম নয়। তাই এটিকে ৬ নম্বর মহাসাগর বলার যথেষ্ট যুক্তি রয়েছে।
আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চলের দেশ বতসোয়ানায় সম্প্রতি বিরল এক হীরার সন্ধান মেলে। ১ দশমিক ৫ সেন্টিমিটারের হীরাটি ৬১০ কিলোমিটার গভীরে গঠিত হয়েছিল বলে গবেষকরা জানান।
তারা বলছেন, হীরাটির বেশিরভাগ অংশজুড়েই পানি। আর এই পানির উৎস খুঁজতে গিয়েই খোঁজ মেলে নতুন মহাসাগরের।
ফ্রাঙ্কফুর্টের গোয়েথে ইউনিভার্সিটির ইনস্টিটিউট ফর জিওসায়েন্সেসের অধ্যাপক ফ্রাঙ্ক ব্রেনকার বলেন, ‘রামন এবং এফটিআইআর স্পেকট্রোমেট্রিসহ বেশ কয়েকটি কৌশলের মাধ্যমে বিরল এই হীরার ওপর গবেষণা চালাই। এতে বহুদিনের একটি তত্ত্বের প্রমাণ মিলেছে যেখানে বলা হয়, ভূপৃষ্ঠের দুই আবরণের মাঝে পানির অস্তিত্ব আছে।
‘সাগরের পানি স্ল্যাবগুলোকে সাবডাক্ট করে এবং একই প্রক্রিয়ায় ট্রানজিশন জোনে প্রবেশ করে। এর মানে হলো, আমাদের গ্রহের পানিচক্র পৃথিবীর অভ্যন্তরের সঙ্গে যুক্ত।’
‘পুরো ট্রানজিশন জোন ভাঙতে প্রায়ই অসুবিধায় পড়তে হয় সাবডাক্টিং প্লেটগুলোকে। তাই এই অঞ্চলে বিপুল পানি থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। এসব কিছু এটাই ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, এখানে লুকিয়ে আছে আরেকটি মহাসাগর।’