২০২৩ সালে মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার হার ছিল ৩২ দশমিক ৮৫ শতাংশ, যা আগের বছরের তুলনায় ৩ দশমিক ১৩ শতাংশ কম। আর নারী শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে ঝরে পড়ার হার ছিল ৩৪ দশমিক ৮৭ শতাংশ। ২০২২ সালে এই হার ছিল ৪০ দশমিক ৭৮ শতাংশ। এছাড়া ২০২৩ সালে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা আগের বছরের তুলনায় কমেছে ৭ লাখ ২৩ হাজারের বেশি। এ সময়ে কারিগরি প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৩৬ হাজার এবং মাদ্রাসাশিক্ষার্থী বেড়েছে প্রায় ৪ হাজার।
বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) প্রকাশিত বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর (ব্যানবেইস) খসড়া প্রতিবেদনে এমন তথ্য দেখা গেছে।
ব্যানবেইসের কর্মকর্তারা জানান, এবার নিয়ে টানা তিন বছর ধরে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমছে। এর আগে ২০২১ সালে আগের বছরের তুলনায় ৮৬ হাজার ৫২৮ শিক্ষার্থী কমে যায়। ২০২২ সালে কমে ৪০ হাজার ৫৭১ এবং ২০২৩ সালে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে ৭ লাখ ২৩ হাজার ৪৮৮ জন।
ব্যানবেইসের পরিসংখ্যান বিভাগের প্রধান শেখ মোহাম্মদ আলমগীর প্রতিবেদনটি উপস্থাপনের সময় বলেন, ‘শিক্ষার্থী কমে যাওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ কোভিড-১৯ মহামারি।’
এ সময় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, ঝরে পড়া শিক্ষার্থীর মধ্যে অনেকেই স্থায়ীভাবে পড়াশোনা ছেড়ে দিয়েছে।
এই কর্মকর্তা বলেন, ‘করোনা মহামারি চলাকালে অনেক বাবা-মা তাদের মেয়েদের বিয়ে দিয়েছেন। আর অনেককে (ছাত্রদের) রোজগারে নামতে হয়েছে।’
ব্যানবেইসের প্রতিবেদন উপস্থাপনের সময় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সুলেমান খান বলেন, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানদের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। শিক্ষার্থী বাড়া বা কমার কারণ অনুসন্ধান প্রতিবেদনটির উদ্দেশ্য ছিল না।’এছাড়া কারণ খুঁজতে আরও একটি গবেষণার প্রয়োজন হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
ব্যানবেইসের পরিসংখ্যান প্রধান আলমগীর তার মূল উপস্থাপনায় বলেন, দেশে মাধ্যমিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায় পর্যন্ত ৩৯ হাজার ৭৮৮ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ২ কোটি ৩ লাখ ৮৩ হাজার ৬০ শিক্ষার্থী এবং ৬ লাখ ৪০ হাজার ৬৩৯ জন শিক্ষক আছেন। শিক্ষার্থীদের ৫১ শতাংশ এবং শিক্ষকদের ২৮ শতাংশ নারী।
প্রতিবেদনে আরও দেখা যায়, ১২৩টি ইংলিশ মিডিয়াম সেকেন্ডারি স্কুলে ২৮ হাজার ১৩ শিক্ষার্থী এবং ৫ হাজার ৮৭৩ জন শিক্ষক আছে।
এছাড়া প্রতিবেদনে ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের বিষয়ে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে মাধ্যমিক স্তরে ঝরে পড়ার হার ছিল ৩২ দশমিক ৮৫ শতাংশ, যা আগের বছরের তুলনায় ৩ দশমিক ১৩ শতাংশ কম।
নারী শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে ঝরে পড়ার হার ছিল ৩৪ দশমিক ৮৭ শতাংশ। ২০২২ সালে এই হার ছিল ৪০ দশমিক ৭৮ শতাংশ।
এদিকে, উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে ঝরে পড়ার মোট হার ছিল ২১ দশমিক ৫১ শতাংশ এবং মেয়েদের ক্ষেত্রে এই হার ছিল ২২ দশমিক ৪৫ শতাংশ।
মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ২০২৩ সালে একজন শিক্ষকের বিপরীতে শিক্ষার্থী ছিল ৩৩ জন এবং প্রায় ৭২ শতাংশ শিক্ষক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ছিলেন।
ব্যানবেইসের রিপোর্টে আরও দেখা যায়, ২০২৩ সালে দেশের ৯ হাজার ২৫৯টি মাদ্রাসায় ২৭ লাখ ৫৮ হাজার ৫০৪ জন শিক্ষার্থী এবং ১ লাখ ১৮ হাজার ২৮০ জন শিক্ষক ছিলেন। শিক্ষার্থীদের প্রায় ৫৩ শতাংশ এবং শিক্ষকদের ২০ শতাংশ নারী।