ঢাকা-তাসখন্দ রুটে ফ্লাইট চালুর বিষয়ে সম্মত হয়েছে উভয় পক্ষ। পাশাপাশি ঢাকায় তাসখন্দের দূতাবাস খোলার বিষয়েরও রাজি হয়েছে দেশটি।
শুক্রবার (২৯ জুলাই) ঢাকা সফররত উজবেকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী জামসেদ খোদজায়েভের সঙ্গে রাজধানীর একটি হোটেলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত হয় বলে জানিয়েছেন ড. মোমেন।
বৈঠকে ড. মোমেন গত বছর তার উজবেকিস্তান সফরকালে দেশটির রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাতের কথা স্মরণ করেন এবং ঢাকায় তাসখন্দের একটি কূটনৈতিক মিশন খোলার বিষয়ে উজবেক রাষ্ট্রপতির ইতিবাচক মনোভাবের কথা তুলে ধরেন। বাংলাদেশ সরকার ঢাকায় উজবেকিস্তানের কূটনৈতিক মিশন খোলার ব্যাপারে সব ধরনের সহায়তা দেবে বলেও পররাষ্ট্রমন্ত্রী উজবেকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রীকে আশ্বাস দেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে উজবেক উপ-প্রধানমন্ত্রী ঢাকায় দূতাবাস খোলার ব্যাপারে আশ্বস্ত করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী দুই দেশের মধ্যে যোগাযোগের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি দুদেশের মধ্যে পূর্বের মতো বাণিজ্যিক ফ্লাইট চালুর বিষয়ে জোর দেন। এ বিষয়ে দুদেশের মধ্যে ফ্লাইট পরিচালনায় কোড শেয়ারিং পদ্ধতির নিয়েও আলোচনা হয়। ঢাকা-নয়া দিল্লি রুটে বাংলাদেশ বিমানের নিয়মিত ফ্লাইট এবং নয়া দিল্লি-তাসখন্দ রুটে উজবেক এয়ারের নিয়মিত ফ্লাইট দুটোর মধ্যে কোড শেয়ারিং পদ্ধতিতে দুদেশের জনগণ ভ্রমণ করতে পারবে বলে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়। এছাড়া পরবর্তীতে চাহিদা বিবেচনা করে ঢাকা-তাসখন্দে সরাসরি ফ্লাইট চালুর ব্যাপারে উভয় পক্ষ সম্মত হয়।
উজবেক উপ-প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ এবং উজবেকিস্তানের মধ্যে মোঘল আমল থেকে শুরু হওয়া ঐতিহাসিক বন্ধনের কথা উল্লেখ করেন। তিনি দুদেশের মধ্যে অর্থনৈতিক কূটনীতির ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। এছাড়া তিনি বাংলাদেশের আর্থ সামাজিক উন্নয়ন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
বাংলাদেশ এবং উজবেকিস্তানের মধ্যে বাণিজ্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম ও ইরানের চাবাহার বন্দরের মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপিত হলে পণ্য পরিবহনে খরচ কম হবে বলে উজবেক উপ-প্রধানমন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
ড. মোমেন উজবেকিস্তান থেকে তুলা আমদানির ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেন। উজবেক উপপ্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ উজবেকিস্তান থেকে তুলা আমদানি করে ভ্যালু এডিশনের মাধ্যমে বিশ্বের অন্যান্য দেশে রপ্তানি করতে পারে। মোমেন উজবেকিস্তান থেকে সার আমদানির ব্যাপারেও আগ্রহ প্রকাশ করেন। তিনি ওষুধ শিল্পে বাংলাদেশের অভাবনীয় সাফল্যের কথা তুলে ধরে বলেন, বাংলাদেশের এ অগ্রযাত্রায় উজবেকিস্তানও শরিক হতে পারে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইমাম বোখারির কথা তুলে ধরে বলেন, ইমাম বোখারি বাংলাদেশ বহুল পঠিত এবং বাংলাদেশি নাগরিকদের উজবেকিস্তান ভ্রমণে এবং ব্যবসায়ীদের উজবেকিস্তানে বাণিজ্যের আগ্রহ রয়েছে। এ বিষয়ে সহজে যাতে বাংলাদেশি নাগরিকরা ভিসা পেতে পারে সে বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী আহ্বান জানান। উপ-প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে বলেন, বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য ই-ভিসার ব্যবস্থা চালু করা হচ্ছে, যার মাধ্যমে বাংলাদেশি যেকোনো নাগরিক ভ্রমণ কিংবা ব্যবসা বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে ই-ভিসা গ্রহণ করে উজবেকিস্তান ভ্রমণ করতে পারবেন।
উজবেকিস্তানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. জাহাঙ্গীর আলম এ সময় উপস্থিত ছিলেন।