অকটেন-পেট্রোল আমাদের কিনতে হয় না, চাহিদার চেয়ে বেশি আছে

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অকটেন-পেট্রোল কিনতে হয় না, আমাদের যতটুকু চাহিদা তার চেয়ে অনেক বেশি পেট্রোল ও অকটেন আছে।

বুধবার (২৭ জুলাই) দুপুরে আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের ২৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে অয়োজিত অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, হঠাৎ দেখলাম একজন বললেন আমাদের ডিজেল… (সংকট)। ডিজেল আমাদের কিনতে হয় এটা ঠিক কিন্তু অকটেন আর পেট্রোল কিন্তু আমাদের কিনতে হয় না। এটা আমরা যে গ্যাস উত্তোলন করি সেখান থেকে বাই-প্রোডাক্ট হিসেবে পাই। রিফাইন করে পেট্রোলও পাই, অকটেনও পাই। আমাদের যতটুকু চাহিদা তার চেয়ে অনেক বেশি পেট্রোল ও অকটেন আমাদের আছে।

তিনি বলেন, আপদকালীন তিন মাসের খাদ্যশস্য কেনার মতো বা আমদানি করার মতো অর্থটা যেন আমাদের হাতে থাকে, সেটাই আমরা দেখছি। আমাদের এখন যে রিজার্ভ আছে তাতে ৩ মাস কেন ৬ মাস বা ৯ মাসের খাবারও আমরা কিনে আনতে পারব। কিন্তু আমাদের আবার এই পদক্ষেপ নিতে হবে যে খাদ্যশস্য যেন কিনতে না হয়। আমরা যেন নিজেরা উৎপাদন করতে পারি। নিজেরা সাশ্রয়ী থাকি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন আমাদের যত আমদানি সেগুলো মূলত ক্যাপিটাল মেশিনারিজ। এটা মাথায় রাখতে হবে, এ ক্যাপিটাল মেশিনারিজ আনার পরে যে সমস্ত শিল্প গড়ে উঠবে, সেগুলো যখন উৎপাদনে যাবে সেখানে কিন্তু আমাদের দেশের মানুষ লাভবান হবে। এটা তো অনেক সহজ। এই খরচটা আমাদের করতেই হবে।

দেশ নিয়ে যারা ভুল ও মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ায় তাদের বিষয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, এই যে একটা শ্রেণি আছে অনবরত মানুষকে বিভ্রান্ত করতে চায়, তাদের… এই জ্ঞানীদের কথা শুনে অজ্ঞান হয়ে বিভ্রান্ত না হয় সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে। এ কাজটা করতে হবে আমাদের এখন থেকে। আমাদের উন্নয়নের কথাগুলো মানুষের কাছে তুলে ধরতে হবে। প্রত্যেকটা অঞ্চলে গিয়ে একেবারে তৃণমূলের মানুষের কাছে বারবার বলতে হবে।

সরকারপ্রধান বলেন, বাংলাদেশের এ অগ্রযাত্রা ব্যাহত করতে অনেক চক্রান্ত আছে। আমি বিশ্বাস করি যত চক্রান্তই করুক বাংলাদেশের এই অগ্রযাত্রা কেউ বন্ধ করতে পারবে না। আমরা যে অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছি, ইনশাল্লাহ সেভাবেই এগিয়ে যাব।

তিনি বলেন, আমরা মহাবিপদের মধ্যে যাতে না পড়ি তার জন্য আগে থেকেই ব্যবস্থা নিতে হবে। আর সেই কারণেই কিন্তু আমরা পদক্ষেপ নিয়েছি। বাংলাদেশ সাশ্রয়ী হওয়ার চেষ্টা করছে এবং বিদ্যুতের ব্যবহার সীমিত রাখার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এর মানে এই নয় যে বিদ্যুৎ একেবারে নেই বা শেষ হয়ে যাচ্ছে, তা কিন্তু নয়।

তিনি বলেন, ‘ঝড়-ঝাপটা এবং আন্তজাতিক পরিবেশের কারণে অনেক কিছুই মোকাবিলা করতে হবে। আমরা প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করে যেমন চলি তেমনি বৈশ্বিক যে দুর্যোগ সেটাও মোকাবিলা করে আমরা এগিয়ে যেতে পারব, সে বিশ্বাস আমার আছে।

স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, কে কী বলল সেদিকে না যেয়ে আমরা মানুষের জন্য যে উন্নয়ন করেছি সেই উন্নয়নের কথাগুলো মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। বারবার বলতে হবে। এদিকে দৃষ্টি দিতে হবে এবং এ কাজটা করতে হবে।

সরকার প্রধান বলেন, ‘ষড়ঋতুর দেশ আমাদের। দুই মাস পরপর ঋতু বদলায়, মানুষের মনও বদলায় এবং ভুলেও যায়। কাজেই দুই মাস পর ভুলে যেন না যায়, সে জন্য আমরা কি কাজ করেছি মানুষের কাছে বারবার সেটা বলতে হবে, বোঝাতে হবে। কারণ একটা শ্রেণি আছে যারা মানুষকে বিভ্রান্ত করতে চায়। এই জ্ঞানপাপীদের কথা শুনে অজ্ঞান হয়ে কেউ যেন বিভ্রান্ত না হয়।’

তিনি বলেন, স্বেচ্ছাসেবক লীগ যেভাবে মানুষের সেবায় নিয়োজিত রয়েছে সেভাবেই কাজ করে যাবে এবং সংগঠনকে সুসংগঠিত করে শক্তিশালী করার পাশাপাশি দুঃসময়ে যেভাবে মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে তা অব্যাহত রাখবে। একটি সুশৃঙ্খল সংগঠন হিসেবে জাতির পিতার স্বপ্নের বাংলাদেশ বিনির্মাণে আর্তমানবতার সেবায় নিজেদের নিয়োজিত রাখবে এবং নিবেদিত প্রাণ হয়েই রাজনীতি করবে।

সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু।

স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

স্বেচ্ছাসেবক লীগের গত এক বছরের কর্মকাণ্ড এবং সদ্য প্রয়াত দলটির সাবেক সভাপতি নির্মল রঞ্জন গুহের ওপর দুটি পৃথক ভিডিও চিত্র অনুষ্ঠানে প্রদর্শন করা হয়।

প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে ‘স্বেচ্ছাসেবার ১ বছর’ শীর্ষক প্রকটি প্রকাশনার মোড়কও উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী।