সারাদেশে ৮৮২টি অবৈধ বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ব্লাড ব্যাংক বন্ধ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এর মধ্যে রাজধানীতে ১৬৭টি।রোববার (২৯ মে) সন্ধ্যায় অধিদপ্তরের এক হালনাগাদ তথ্যে বিষয়টি জানানো হয়।
এতে বলা হয়, তিন দিনের অভিযানে ঢাকায় ১৬৭টি, চট্টগ্রামে ২২৯টি, রাজশাহীতে ৭৮টি, রংপুরে ১৪টি, ময়মনসিংহে ৯৬টি, বরিশালে ৫৯টি, সিলেটে ৩৫টি এবং খুলনায় ২০৪টি অবৈধ হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ করা হয়েছে।
এর আগে বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) ডা. মো. বেলাল হোসেন জানান, এখন পর্যন্ত ৫৩৮টি অবৈধ বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ করা হয়েছ। অভিযান অব্যাহত রয়েছে, সংখ্যা বাড়তে পারে।
বেলাল হোসেন বলেন, অবৈধ ক্লিনিক ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোকে আমরা তিন দিন সময় দিয়েছিলাম। আজ শেষ সময়। তবে আমাদের অভিযান আরও কিছুদিন অব্যাহত থাকবে। যাতে করে অনিবন্ধিত ও অনিয়মের দায়ে দণ্ডিত প্রতিষ্ঠানগুলো আবার গড়ে না ওঠে সেজন্য অভিযান চলমান রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা।
গত ২৬ মে ডা. মো. বেলাল হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, দেশের সব অবৈধ ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এই সময়ের পর নিবন্ধনহীন কোনো ক্লিনিক বা ডায়াগনস্টিক সেন্টার চালু থাকলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
যারা সিদ্ধান্ত মানবে না, তাদের বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত নেবেন জানতে চাইলে সে সময় তিনি বলেন, যেসব ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেনি, সেগুলো অবৈধ। আমাদের বেঁধে দেওয়া সময়ের পর যদি নিবন্ধনহীন কেউ কার্যক্রম পরিচালনা করে, তাহলে তার বিরুদ্ধে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব।
মূলত এরপরই অভিযান শুরু হয়।
গত ২৫ মে দেশের অবৈধ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় দেশের বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোর মনিটরিং ও সুপারভিশন বৃদ্ধির বিষয়ে আলোচনা হয়। আলোচনা শেষে কয়েকটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সিদ্ধান্তগুলো হলো
১. আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে দেশের অনিবন্ধিত বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো বন্ধ করতে হবে। অনিবন্ধিত বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর বিরুদ্ধে এ কার্যক্রম চলমান থাকবে। এ কার্যক্রমে স্থানীয় প্রশাসন ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করতে হবে।
২. যেসব প্রতিষ্ঠান নিবন্ধন নিয়েছে কিন্তু নবায়ন করেনি, তাদের নিবন্ধন নবায়নের জন্য একটি সময়সীমা দিতে হবে। নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে নবায়ন না করলে সেসব প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বন্ধ করতে হবে।
৩. বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে অপারেশন করার সময় অ্যানেসথেসিয়া দেওয়া ও ওটি অ্যাসিস্ট করার ক্ষেত্রে নিবন্ধিত ডাক্তার ছাড়া অন্যদের রাখা হলে সেসব প্রতিষ্ঠান ও জড়িতদের বিরুদ্ধে লাইসেন্স বাতিলসহ কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
৪. যেসব প্রতিষ্ঠান নতুন নিবন্ধনের আবেদন করেছে তাদের লাইসেন্স দেওয়ার কার্যক্রম দ্রুত শেষ করতে হবে। লাইসেন্স পাওয়ার আগে এসব প্রতিষ্ঠান কার্যক্রম চালাতে পারবে না।
উল্লেখ্য, অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী দেশে অনুমোদিত ও আবেদন করা ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সংখ্যা প্রায় ১১ হাজার।