এবছর সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যাওয়ার সর্বনিম্ন প্যাকেজ ৪ লাখ ৬২ হাজার টাকা (প্যাকেজ-২) নির্ধারণ করা হয়েছে। এই প্যাকেজের আওতায় হজযাত্রীরা মক্কার মসজিদুল হারামের ১৫০০ মিটারের মধ্যে অবস্থান করবেন।
বুধবার (১১ মে) সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান দুলাল।
তিনি বলেন, এবছর সরকারিভাবে ২টি প্যাকেজ ঘোষণা করা হলো। প্যাকেজ-১ এ হজে যেতে ৫ লাখ ২৭ হাজার ৩৪০ টাকা খরচ হবে। এই প্যাকেজের যাত্রীরা মসজিদুল হারামের ১০০০ মিটার দূরত্বের মধ্যে থাকবেন। এছাড়া বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যেতে একটি প্যাকেজে খরচ ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৫৬ হাজার ৬৩০ টাকা।
সংবাদ সম্মেলনে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী বলেন, আগামী ৮ জুলাই সৌদি আরবে পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। দ্বি-পাক্ষিক হজচুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ থেকে এ বছর সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৪ হাজার জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৫৩ হাজার ৫৮৫ জনসহ সর্বমোট ৫৭ হাজার ৫৮৫ জন পবিত্র হজ পালনের জন্য সৌদি আরব যাওয়ার সুযোগ পাবেন। হজযাত্রীর বিমান ভাড়া, সৌদি আরবের বাড়ি ভাড়া, সার্ভিস চার্জ, মুয়াল্লিম ফি, জমজমের পানি, খাবার খরচ এবং অন্যান্য ফি হিসাব করে ২০২২ সালের জন্য সরকারি ব্যবস্থাপনার জন্য ২টি প্যাকেজ এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনার জন্য একটি প্যাকেজের প্রস্তাব করা হয়েছে। এছাড়া হজযাত্রীদের কোরবানি বাবদ প্যাকেজ মূল্যের অতিরিক্ত ৮১০ সৌদি রিয়াল বা ১৯ হাজার ৬৮৩ টাকা পরিশোধ করতে হবে।
২০২০ সালের তুলনায় সরকারি ব্যবস্থাপনার প্যাকেজ-১ এর দাম বেড়েছে ১ লাখ ২ হাজার ৩৪০ টাকা এবং প্যাকেজ-২ এর দাম বেড়েছে ১ লাখ ২ হাজার ১৫০ টাকা।
দাম বাড়ার কারণ হিসেবে মন্ত্রী বলেন, ২০২০ সালে সৌদি রিয়ালের বিনিময় হার ছিল ২৩ টাকা। আজ এই হারের পরিমাণ ২৪ টাকা ৩০ পয়সা। এটিও প্যাকেজ মূল্য বাড়ার অন্যতম কারণ। এছাড়া সৌদি আরবে সব খাতের উপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট, সার্ভিস চার্জ, কর অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। মোয়াচ্ছাছা এর খরচ দ্বিগুণ হয়েছে। বাড়ি ভাড়া বেড়েছে।
২০২০ সালে ৩টি প্যাকেজ থাকলেও এবার ২টি। সে সময়ের প্যাকেজ-৩ এর যাত্রীদের প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, তারা প্যাকেজ-১ এবং প্যাকেজ-২ এর যেকোনো একটি নির্বাচন করতে পারবেন। অতিরিক্ত টাকা ব্যাংকে স্থানান্তরের পর ব্যাংকগুলো ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ই-হজ সিস্টেমে প্যাকেজ স্থানান্তরের সেই অর্থ প্রাপ্তি তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত করবে। অর্থপ্রাপ্তি নিশ্চিত হলে হজযাত্রীকে ই-হজ সিস্টেম থেকে তার পিলগ্রিম আইডি (PID) দেওয়া হবে। যদি কোনো কোটা খালি থাকে, তাহলে অবশিষ্ট কোটা পূরণের জন্য সরকারি ব্যবস্থাপনায় প্রাক নিবন্ধনের ক্রম অনুসারে পরিচালক, হজ অফিস ঢাকার অনুমোদনক্রমে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নিবন্ধন করতে পারবেন। ২০২০ সালে যেসব নিবন্ধিত হজযাত্রী প্যাকেজ স্থানান্তরের মাধ্যমে ২০২২ সালে নিবন্ধন চূড়ান্ত করবেন না অথবা হজে যেতে পারবেন না। তাদের হজ নিবন্ধন বাতিল হবে এবং তারা বিধি অনুযায়ী টাকা ফেরত পাবেন।
বেসরকারি হজ ব্যবস্থাপনার বিষয়ে তিনি বলেন, বেসরকারি হজ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে এজেন্সির সঙ্গে হজযাত্রীর চুক্তি অনুযায়ী ২০২০ সালের নিবন্ধনের অর্থ সমন্বয় করে ২০২২ সালের প্যাকেজে ঘোষিত অবশিষ্ট অর্থ নিবন্ধনকারী সংশ্লিষ্ট হজ এজেন্সির নির্ধারিত ব্যাংক অ্যাকাউন্টে দ্রুততম সময়ের মধ্যে জমা দিতে হবে। হজযাত্রীর কাছ থেকে প্যাকেজে ঘোষিত অর্থ পাওয়ার পরেই সংশ্লিষ্ট এজেন্সি তার পিলগ্রিম আইডি দেবে। উল্লেখ্য, সংশ্লিষ্ট এজেন্সি বিমান ভাড়া বাবদ নেওয়া অর্থ সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইন্স বরাবর টিকিটের জন্য পে-অর্ডারের মাধ্যমে পাঠাবে।
প্রত্যেক হজ এজেন্সি কমপক্ষে ১০০ জন এবং সর্বোচ্চ ৩০০ জন হজযাত্রী পাঠাতে পারবে। হজ এজেন্সি ছাড়া অন্য কোনো এজেন্সির কাছে হজযাত্রীর বিমান টিকিট বিক্রির জন্য অনুমতি দেওয়া যাবে না। কোনো হজ এজেন্সিকে কোনো অবস্থাতেই ৩০০-র বেশি টিকিট দেওয়া যাবে না বলে জানান মন্ত্রী।
হজযাত্রার কিছু বিষয় তুলে ধরে তিনি বলেন, এ বছর ‘রুট টু মক্কা ইনিশিয়েটিভ’ এর আওতায় ঢাকার শতভাগ যাত্রীর সৌদি আরবের প্রি-অ্যারাইভাল ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করার পরিকল্পনা রয়েছে। প্রতি ৪৪ জন হজযাত্রীর জন্য একজন করে গাইড নিয়োগ করা হবে।