প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িক চেতনার দেশ। এখানে সব ধর্মের মানুষ তার ধর্ম পালন করবে স্বাধীনভাবে।’
মঙ্গলবার (১৯ অক্টোবর) শেখ রাসেল দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের আলোচনা সভায় যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী।
পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের বিচার প্রক্রিয়া বর্ণনা করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘খালেদা জিয়ার খুনিদের প্রতি এই যে পক্ষপাতিত্ব এটার কারণটা কী? কারণটা খুব স্পষ্ট। কারণ খুনি মোস্তাকের সঙ্গে জিয়াউর রহমানও সম্পূর্ণভাবে এই খুনের সঙ্গে জড়িত ছিল। রাসেলকে সর্বশেষে হত্যা করা হয়। বলা হয়েছিল, ওই ছোট্ট প্রাণটুকুও যেন না বাঁচে। এই নির্দেশটা কে দিয়েছিল? কারা দিয়েছিল? সব শেষে, সব থেকে এটাই কষ্টের।’
তিনি বলেন, ‘যখন বিরোধী দলে ছিলাম তখনো চেষ্টা করেছি এখনো চেষ্টা করি, এই দেশের শিশুরা তাদের লেখাপড়া, চিকিৎসা যেন পায়; তারা যেন নিয়মিত স্কুলে যেতে পারে। আজকে যেমন আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি, সেই ডিজিটাল বাংলাদেশ তৈরির জন্য তাদেরকে প্রস্তুত করা, তাদেরকে ট্রেনিং দেওয়া, সব রকম ব্যবস্থা করে দিচ্ছি।’
সরকার প্রধান বলেন, ‘শিশুর নিরাপত্তা, শিশু অধিকার আইন তো জাতির পিতা ১৯৭৪ সালে করে দিয়ে গেছেন। প্রাথমিক শিক্ষাটাকে অবৈতনিক করে দিয়ে গেছেন, বাধ্যতামূলক করে দিয়ে গেছেন। কাজেই আমার বাবার আদর্শ নিয়েই আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। আমাদের এই দেশের শিশুরা যেন আর এই নির্মমতার শিকার না হয়।’
তিনি বলেন, ‘কিন্তু দুর্ভাগ্য আমাদের এখনো আমরা দেখি সেই নির্মমতা। এখনো মাঝে মাঝে দেখি। পরবর্তীতেও আমরা দেখেছি। কিন্তু এইটা যেন না হয়। দেখেছি, আগুন দিয়ে পুড়িয়ে কীভাবে হত্যা করা হচ্ছে জ্যান্ত মানুষগুলোকে, শিশুকে পর্যন্ত। এই খালেদা জিয়া বিরোধী দলে থাকতে অগ্নিসন্ত্রাস করে চলন্ত বাসে আগুন দিয়ে পুড়িয়েছে। বাপ দেখেছে নিজের চোখের সামনে আগুনে পুড়ে সন্তান মারা যাচ্ছে। সে রকম নিষ্ঠুর ঘটনা তো বাংলাদেশে ঘটেছে। এটাই হচ্ছে সব থেকে দুর্ভাগ্য এই বাংলাদেশের।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি এইটুকু চাইব এখানে মানবতার প্রশ্ন যারা তোলে তারা যেন এই ঘটনাগুলো ভালোভাবে দেখে যে, বাংলাদেশে কী ঘটলো। কিন্তু আমরা সরকারে আসার পর থেকে আমাদের প্রচেষ্টা যে, কোনো শিশু রাস্তায় ঘুরে বেড়াবে না, টোকাই থাকবে না। তাদের যেন একটা ঠিকানা থাকে, তারা যেন একটু ভালোভাবে বসবাস করতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের একটাই লক্ষ্য এই দেশের প্রতিটি মানুষ একটা ঘর পাবে। প্রতিটি মানুষ শিক্ষা পাবে। চিকিৎসা পাবে। ভালোভাবে বাঁচবে। প্রতিটি শিশু তার যে মেধা, তার যে জ্ঞান, তার যে বুদ্ধি সেটা যেন বিকশিত হতে পারে। বাংলাদেশকে তারা যেন সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে। সেই চেষ্টাই আমি করে যাচ্ছি।’