মিয়ানমার সীমান্তে বিশৃঙ্খলা বা অপকর্ম রোধে শক্ত অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ সরকার। অপকর্ম বা বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে সীমান্তে যা যা দরকার, সবই করা হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। বুধবার (৬ অক্টোবর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এসব কথা জানান তিনি।
ড. মোমেন বলেন, একজন রোহিঙ্গা নেতা মারা গেছেন। কারো মৃত্যু আমরা চাই না। রোহিঙ্গা যারা আছেন, তাদের আমরা পুরোপুরি নিরাপত্তা দিচ্ছি। আমাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও বাড়ানো হয়েছে।
তিনি বলেন, বর্ডারগুলো আমরা টাইটেন (আঁটসাঁট) করব, যাতে অবৈধ অস্ত্র, মাদক চোরাচালান ও মানবপাচারের মতো কোনো অপকর্ম না হয়। আমরা শক্ত অবস্থানে রয়েছি।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে মন্ত্রী বলেন, মিয়ানমার সীমান্ত দিয়ে এদিকে কিছু অবৈধ অস্ত্র আসছে। আমাদের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তথ্য এসেছে। সীমান্তে কোনো বিশৃঙ্খলা হতে দেব না।
কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গাদের শীর্ষ নেতা মুহিবুল্লাহ হত্যার ঘটনাকে দুঃখজনক আখ্যা দিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তার হত্যার সঙ্গে সঙ্গে আমরা অ্যাকশন নিয়েছি। তিনজন ধরা পড়েছেন। আমাদের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ নিয়ে কাজ করছে। তার হত্যার বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। যারা মেরেছে আমরা তাদের বের করব, চিহ্নিত করব এবং তাদের শাস্তি দেব। যেন এ ধরনের দুর্ঘটনা না ঘটে।
রোহিঙ্গাদের নিজ ভূমি রাখাইনে ফেরানোর চেষ্টার কারণে মুহিবুল্লাকে হত্যা করা হতে পারে বলে ধারণা করছেন ড. মোমেন। তিনি বলেন, মুহিবুল্লাহ নিজ দেশে ফেরত যাওয়ার জন্য নানা আন্দোলন করেছিলেন। কোনো কোনো লোক হয়তো তা পছন্দ করেনি, এজন্য হয়তো তাকে মেরে ফেলা হয়েছে। তবে এটি খুবই দুঃখজনক।
ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গাদের পালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, পালিয়ে যাবে না কেন? এটা তো তাদের দেশ নয়। তারা তাদের দেশে চলে যেতে চায়, তাদের দেশে না পারলেও অন্য দেশে চলে যেতে চায়। তাদের আত্মীয়-স্বজন যারা অন্যান্য দেশে আছে, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তারা চলে যেতে চায়। তারা যেতে চায়, যাক; তাতে আমাদের কী? বাংলাদেশের অন্য কোথাও গেলে আমরা আটক করে নিয়ে আসব।
কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে নোয়াখালীর ভাসানচরে স্থানান্তরিত রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তায় জাতিসংঘের মাঠ পর্যায়ে কাজ শুরুর বিষয়ে মোমেন জানান, সবকিছু চূড়ান্ত। যেকোনো সময় তারা যাবে। তবে আমি চূড়ান্ত তারিখ বলতে পারব না।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে কোনো সুখবর আছে কি না-এমন আরেক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, অপেক্ষা করুন। আমাদের ভালো দিন আসবে। আমরা সবসময় আশাবাদী। আফগানিস্তান ইস্যুর কারণে রোহিঙ্গা ইস্যুটি চাপা পড়ে যাবার বিষয়টিও ঠিক না। এবার জাতিসংঘে যে বড় ইভেন্ট হয়েছে, সেখানে বড় বড় দেশগুলো সবাই এক বাক্যে এর ওপর জোর দিয়েছে। আশা রাখুন, ভালো কিছু হবে।