বিশ্বের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার জন্য অধিক খাদ্য উৎপাদনের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী একটি ‘স্থিতিশীল খাদ্য ব্যবস্থা’ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে পাঁচ দফা সুপারিশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
‘জাতিসংঘ ফুড সিস্টেমস সামিট ২০২১’-এ বৃহস্পতিবার ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে তিনি একইসঙ্গে একটি বৈশ্বিক জোট ও অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার পাশাপাশি দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতার মাধ্যমে খাদ্যের অপচয় হ্রাসের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, পর্যাপ্ত খাবার পাওয়া একটি মৌলিক অধিকার, যা সব নাগরিকের কল্যাণ ও স্বাস্থ্যের সঙ্গে যুক্ত।
৭৬তম জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) উচ্চ পর্যায়ের সম্মেলনে বক্তৃতাকালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন যে, খাদ্য নিরাপত্তা জলবায়ু পরিবর্তনের আন্তঃসংযুক্ত।
পূর্ব-রেকর্ডকৃত বক্তৃতায় ‘২০৫০ সালের মধ্যে বৈশ্বিক জনসংখ্যা ১০ বিলিয়ন হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই অতিরিক্ত জনসংখ্যার জন্য আরও খাদ্য উৎপাদন করা অপরিহার্য।
শেখ হাসিনা তার পরামর্শে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে কৃষি উন্নয়নের জন্য গবেষণা, বিনিয়োগ ও উন্নত প্রযুক্তি বিনিময়ের ওপর জোর দেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, টেকসই খাদ্য ব্যবস্থা অর্জনের জন্য উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য বর্ধিত তহবিল প্রয়োজন।
টেকসই নিরাপত্তা অর্জনে প্রযুক্তি শেয়ারিংসহ জলবায়ুজনিত চরম ইভেন্টগুলোর সাথে অভিযোজনের জন্য প্রতিশ্রুত তহবিল ছাড়েরও পরামর্শ দেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী এ শীর্ষ সম্মেলনে আয়োজনে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য জাতিসংঘ মহাসচিবকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, মহামারি পরবর্তী পুনরুদ্ধার এবং স্থিতিশীল খাদ্য ব্যবস্থার মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) অর্জনে এ সম্মেলন গুরুত্বপূর্ণ।
শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশনায় প্রণীত কাংলাদেশের সংবিধানে খাদ্য ও পর্যাপ্ত পুষ্টিকে মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা এজেন্ডা ২০৩০ অর্জনে আমাদের জাতীয় নীতিমালা ও কর্মপরিকল্পনায় খাদ্য ব্যবস্থার রূপান্তরকে একটি অন্তর্ভুক্ত হাতিয়ার হিসেবে সমন্বিত করেছি।
শেখ হাসিনা বলেন, অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা, জাতীয় কৃষি নীতি-২০১৮, জাতীয় খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নীতি-২০২০ এবং এর কর্মপরিকল্পনা (২০২১-২০৩০) দেশের খাদ্য ব্যবস্থার রূপান্তরের প্রয়োজনীয়তাকে স্বীকৃতি দেয়।
তিনি বলেন, বর্তমানে আমাদের খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির হার জনসংখ্যা বৃদ্ধির হারকে ছাড়িয়ে গেছে …। আমরা খাদ্য ঘাটতির দেশ থেকে খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে উঠেছি এবং দীর্ঘমেয়াদি খাদ্য নিরাপত্তার জন্য কাজ করছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঘনঘন চরম আবহাওয়া-জনিত দুর্যোগ এ গতিবেগকে প্রভাবিত করছে। জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার বৈশ্বিক নেতা হিসেবে বাংলাদেশ জলবায়ু-সহিষ্ণু কৃষি ও খাদ্য ব্যবস্থা নিয়েও কাজ করছে।
তিনি বলেন, খাদ্য নিরাপত্তার পাশাপাশি আমরা সবার জন্য মানসম্মত খাদ্য নিশ্চিত করতে আমাদের প্রচেষ্টা জোরদার করেছি।
সূত্র : বাসস