দেশের বহুল আলোচিত দহগ্রাম আঙ্গুরপোতা তিনবিঘা করিডোরে বাংলাদেশিদের চলাচলের একমাত্র সড়কটির দুই পাশে তিন ফুট উঁচু দেয়াল নির্মাণের চেষ্টা করেন ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিএসএফ। বুধবার সকালে বিএসএফ ওই দেয়ালের নির্মাণ কাজ শুরু করলে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবি’র প্রতিবাদে তা বন্ধ হয়ে যায়।
বিজিবি’র দাবি, কোনো আলোচনা ছাড়াই বিএসএফ বাংলাদেশিদের চলাচলের একমাত্র সড়কটির দুই পাশে দেয়াল নির্মাণ কাজ শুরু করেন। ওই দেয়ালের কারণে চলাচলে যেমন সমস্যা সৃষ্টি হবে। তেমনি দুর্ঘটনাও বেড়ে যাবে।
লালমনিরহাটে পাটগ্রাম উপজেলার কুচলিবাড়ি ইউনিয়নের পানবাড়ি এলাকা থেকে দহগ্রাম ইউনিয়নের ভূখণ্ড পর্যন্ত করিডোর সড়কটির দৈর্ঘ্য ১৭৮ মিটার ও প্রস্থ ৮৫ মিটার। সড়কটি ২৪ ঘণ্টা ব্যবহারের জন্য ২০১১ সালের ১৯ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে খুলে দেন। তখন থেকে একটানা সড়কটি ব্যবহৃত করছেন বাংলাদেশের লোকজন।
স্থানীয়রা জানান, কয়েকদিন আগে তিনবিঘা করিডোর ভারতীয় অংশে ইট, বালু, সিমেন্ট, লোহাসহ নির্মাণ সামগ্রী এনে রাখেন ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিএসএফ। দুই দেশের মধ্যে কোনো প্রকার আলোচনা ছাড়াই ৫ সেপ্টেম্বর থেকে ১৪/১৫ জন নির্মাণ শ্রমিক করিডোর সড়কের দুই পাশে গর্ত খনন করেন।
খবর পেয়ে ৫১ বিজিবি পানবাড়ি কোম্পানি কমান্ডার জাহাবুল ইসলাম বিএসএফকে গর্ত করার ব্যাপারে জানতে চাইলে তারা বলেন, ঊর্ধ্বতন কৃর্তপক্ষের নির্দেশে সড়কটি সংস্কার ও সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ করা হচ্ছে। এতে পথচারীদের চলাচলে কোনো সমস্যা হবে না। দুইদিনে সড়কের প্রায় অর্ধেক অংশে গর্ত করা হয়। কিন্তু বুধবার সকালে করিডোর সড়কের পূর্ব-দক্ষিন দিকে তিন ফুট উঁচু দেয়াল নির্মাণকাজ শুরু করে বিএসএফ। ভারতীয় কর্তৃপক্ষ যেভাবে নির্মাণকাজ করছিল সেভাবে নির্মাণ সম্পন্ন করা হলে এদিকে বাংলাদেশি পথচারীদের চলাচলে সমস্যা সৃষ্টি হবে অন্যদিকে সড়ক দুর্ঘটনাও বেড়ে যাবে। বিষয়টি বুঝতে পেরে বুধবার সকালে কাজে বাধা দেয় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবি। পরে কাজ বন্ধ করে বিএসএফ।
দহগ্রামের বাসিন্দা সেকেন্দার আলী বলেন, ভারতীয় বিএসএফ যেভাবে দেয়াল নির্মাণ করছে এতে সড়কটি আরও চিকন হতো। মানুষের চলাচলে সমস্যা হবে। এজন্য সবাই গিয়ে কাজ বন্ধ করে দেই।
একই ইউনিয়নের সাইফুল আলম বলেন, সড়ক দিয়ে ভারতের লোকজন অবাধে চলাচল করেন। আমরা শুধু হেঁটে রাস্তা পার হই। বিএসএফ সংস্কারের নামে রাস্তাটি ছোট করছিল।
দহগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল হোসেন প্রধান বলেন, তারা যেভাবে দেয়াল নির্মাণ করছিলেন তাতে মানুষের চলাচলে সমস্যা হতো। স্থানীয় জনগণসহ বিজিবির বাধায় কাজটি বন্ধ করে দিয়েছে বিএসএফ। ফলে বিএসএফ কাজ বন্ধ রেখেছে।
৫১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের পানবাড়ি কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার জাহাবুল ইসলাম বলেন, ভারতীয় নির্মাণ শ্রমিকদের দিয়ে রাস্তার দুই পাশে সংস্কারের নামে দেয়াল নির্মাণ করা হচ্ছিল। আমরা বাধা দিয়েছি।
৫১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল ইসহাক আলীর সঙ্গে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।