বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তরের দায়িত্ব সামলানো নিয়ে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর মধ্যে শীতল লড়াই চলছে। লড়াই করছেন ভিতরে ভিতরে। এই লড়াইয়ে দপ্তরের দায়িত্ব থেকে রিজভীকে সরিয়ে তার জায়গায় নিজের লোক বসাতে চাচ্ছেন ফখরুল। আর রিজভী চাচ্ছেন নিজের দায়িত্বটা ধরে রাখতে। কিন্তু তিনি বারবার শারীরিক অসুস্থতার কাছে হেরে যাচ্ছেন। আর এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে দপ্তরের নিজের লোকের দায়িত্বটা পাকাপোক্ত করতে চাচ্ছেন মির্জা ফখরুল। কিন্তু এখন পর্যন্ত তিনি সফল হননি। বিএনপির একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
রুহুল কবির রিজভী গত বছর ১৩ অক্টোবর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সাথে সাথেই কেন্দ্রীয় দপ্তরের দায়িত্ব পেয়েছিলেন দলটির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স। পরে ওই বছরের ১০ ডিসেম্বর চিকিৎসা শেষে আবারও দপ্তরের দায়িত্ব নেন রিজভী।
এরপর চলতি বছরে ১৭ মার্চ করোনায় আক্রান্ত হয়ে ফের হাসপাতালে ভর্তি হন রিজভী। আক্রান্তের ৩ দিন পরেই তার জায়গায় আবারও কেন্দ্রীয় দপ্তরের দায়িত্ব দেয়া হয় সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্সকে। তবে এবার চার মাস অতিবাহিত হলেও এখনো পুরোপুরিভাবে সুস্থ না হওয়ার দায়িত্ব হারানোর শঙ্কার মধ্যে পড়েছেন রিজভী।
বিএনপির একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, অসুস্থতার পর থেকেই রুহুল কবির রিজভীকে দপ্তরের দায়িত্ব থেকে সরানোর চেষ্টা চলছে। এজন্য পুরোপুরি সুস্থ না হয়েও দায়িত্ব পুনরুদ্ধার করতে গত ৬ আগস্ট প্রকাশ্যে দলীয় রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন রিজভী।
গত ২০ মার্চ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে দপ্তরের দায়িত্ব এমরান সালেহ প্রিন্সকে দেয়া হয়। ওই চিঠি বলা হয়েছিল, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অসুস্থ হওয়ায় তিনি সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্সকে অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে সাময়িকভাবে দপ্তরের দায়িত্ব পালন করতে অনুরোধ করা যাচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির এক সিনিয়র নেতা বলেন, এখন মোড় ঘুরতে শুরু করেছে। কারণ বিএনপি মহাসচিব এই দায়িত্ব থেকে রিজভীকে অব্যাহতি দিয়ে প্রিন্স রাখতে চাচ্ছেন। আর প্রিন্স বলছেন, দল যে সিদ্ধান্ত দেবেন তা তিনি মেনে নেবেন।
দপ্তরের দায়িত্ব প্রসঙ্গে জানতে চাইলে রুহুল কবির রিজভী বলেন, শ্বাসকষ্টের কারণে দুই-তিন তলা উঠতে কষ্ট হয়। আশা করছি, আগামী ২০ থেকে ২৫ দিনের মধ্যে ঠিক হয়ে যাবে।
কেন্দ্রীয় দপ্তরের দায়িত্ব থেকে তাকে সরানোর বিষয়ে জানতে চাইলে রিজভী বলেন, আমি কিছু শুনি নাই।
এবিষয়ে সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, উনার সঙ্গে (রুহুল কবির রিজভী) আমার প্রায় প্রতিদিনই কথা হয়। আমি আশা করছি, দ্রুত সুস্থ হয়ে উনি কাজে ফিরে আসবেন।