রসুন একটি উপকারী ভেষজ, সন্দেহ নেই। নানা ধরনের উপকারিতা পেতে নিয়মিত রসুন খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। ছোট থেকে বড় অনেক অসুখ থেকেই দূরে রাখতে কাজ করে এই রসুন। এই ভেষজকে প্রাকৃতিক এন্টিবায়োটিকও বলা হয়। তবে সব সময় যে এটি সবার জন্য উপকারী তা কিন্তু নয়। কারও কারও ক্ষেত্রে রসুন ক্ষতিকর হতে পারে।
আমেরিকার ন্যাশনাল ক্যানসার ইনস্টিটিউটের প্রকাশিত গবেষণা বলছে, অনেকের ক্ষেত্রে খালি পেটে কাঁচা রসুন খেলে অ্যাসিডের সমস্যা, বমিভাব হতে পারে। অনেক সময় অতিরিক্ত রসুন খাওয়ার কারণে হাইফিমা নামক সমস্যাও দেখা দিতে পারে। সেইসঙ্গে হতে পারে চোখে রক্তক্ষরণের সমস্যাও।
হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুলের এক গবেষণা জানিয়েছে, রসুনে থাকা কিছু উপাদান বাড়িয়ে দিতে পারে জিইআরডি-র মতো পেটের সমস্যা। যে কারণে সবার রসুন খাওয়া ঠিক নয়। তবে কীভাবে বুঝবেন যে কাদের জন্য রসুন ক্ষতিকর? চলুন জেনে নেওয়া যাক-
গর্ভবতীদের জন্য
গর্ভবতীদের বিভিন্ন খাবারের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হবু মায়েদের জন্য রসুনকে নিরাপদ বলা যায় না। কারণ এই ভেষজ প্রসব বেদনা বাড়িয়ে দিতে পারে। আবার যেসব মা শিশুকে বুকের দুধ খাওয়াচ্ছেন তাদেকেও রসুন থেকে দূরে থাকতে বলা হয়। কারণ মা রসুন খেলে তা বুকের দুধের স্বাদ পরিবর্তন করতে পারে।
যকৃতের সমস্যা থাকলে
রক্ত পরিশোধন, শরীর থেকে অ্যামোনিয়া অপসারণ, চর্বি ও প্রোটিনের বিপাক ইত্যাদি কাজ করে থাকে আমাদের যকৃত। কিন্তু আপনি যদি অতিরিক্ত রসুন খান তাহলে তাতে থাকা অ্যালিসিন নামক উপাদান এই যকৃতে বিষক্রিয়া পর্যন্ত তৈরি করতে পারে। তাই রসুন খাওয়ার সময় এদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
রক্তচাপ কম হলে
অনেকের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত রসুন খাওয়ার ফলে মাথা ঘোরার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। অতিরিক্ত রসুন খাওয়ার কারণে কমে যেতে পারে রক্তচাপ। ফলে দেখা দিতে পারে মাথা ঘোরানো, দুর্বলতা, বমি ইত্যাদি সমস্যা। তাই যাদের লো ব্লাড প্রেশার, তারা রসুন অতিরিক্ত খাবেন না।
ডায়েরিয়া
কারও কারও ক্ষেত্রে অতিরিক্ত রসুন খাওয়ার ফলে পেট খারাপের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। রসুনে থাকা সালফার পেটে গ্যাস তৈরি করে। যে কারণে ডায়েরিয়া হতে পারে। তাই যারা প্রায়ই পেটের সমস্যায় ভোগেন তাদের জন্য রসুন বিশেষ উপকারী নয়। তাদের ক্ষেত্রে এটি এড়িয়ে চলাই ভালো।
মুখে সংক্রমণ থাকলে
রসুন খাওয়া উপকারী একথা সবার জানা। কিন্তু রসুনে থাকা সালফারের কারণে এটি খাওয়ার পরপরই মুখে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয়। তাই যারা মুখের নানা সংক্রমণে ভুগছেন, তাদের জন্য রসুন এড়িয়ে চলাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।
অতিরিক্ত ঘাম
কারও কারও ক্ষেত্রে লম্বা সময় ধরে রসুন খাওয়ার কারণে দেখা দিতে পারে অতিরিক্ত ঘামের সমস্যা। যে কারণে গায়েও সৃষ্টি হতে পারে ভীষণ দুর্গন্ধ। তাই যাদের স্বাভাবিকের তুলনায় ঘাম বেশি হয় তারা রসুন খাওয়া এড়িয়ে চলবেন।