<< নতুন প্রজাতির ‘দানব’ সাপের সন্ধান আমাজনে

বিশ্বের বৃহত্তম অরণ্য দক্ষিণ আমেরিকার আমাজন রেইনফরেস্টে নতুন প্রজাতির দানবাকৃতির সাপের সন্ধান পেয়েছে অস্ট্রেলীয় জীববিজ্ঞানীদের একটি দল। বিজ্ঞানীদের দাবি, দৈর্ঘ্য ও ওজনের বিচারে এটি বর্তমান বিশ্বের বৃহত্তম সাপ।

প্রজাতিগত বিবেচনায় এই মুহূর্তে বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রজাতির সাপের নাম অ্যানাকোন্ডা। অ্যাকাকোন্ডার কয়েকটি উপপ্রজাতি রয়েছে। এসব উপপ্রজাতির মধ্যে এতদিন পর্যন্ত আকার-ওজনে সবচেয়ে বড় বলে গণ্য করা হতো সাউদার্ন গ্রিন অ্যানাকোন্ডাকে। এই উপপ্রাজাতির এক একটি নারী সাপের গড় দৈর্ঘ্য ১৫ ফুট ১ ইঞ্চি, ওজন ৮০ কেজি এবং পুরুষ সাপের গড় দৈর্ঘ্য ৯ ফুট ১০ ইঞ্চি এবং ওজন ৩০ কেজি বা তার বেশি হয়ে থাকে।

নতুন যে সাপটির সন্ধান পাওয়া গেছে, সেটিও অ্যানাকোন্ডা প্রজাতিরই। তবে এই উপপ্রজাতির নারী সাপদের গড় দৈর্ঘ্য ২০ ফুট বা তার কিছু বেশি, ওজন ১৫০ কেজি থেকে ১৮০ কেজি এবং পুরুষ সাপদের গড় দৈর্ঘ্য ১২/ ১৫ ফুট বা তার কিছু বেশি এবং ওজন ৭০ কেজি থেকে ১৩০ কেজি হয়ে থাকে।

নতুন প্রজাতির এই সাপটির নাম দেওয়া হয়েছে নর্দার্ন গ্রিন অ্যানাকোন্ডা। বিজ্ঞানীদের যে দল সাপটির সন্ধান পেয়েছে, সেই দলের সদস্যরা সবাই অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের। বিশ্ববিদ্যালয়েরর জীববিজ্ঞান শাখার অধ্যাক ও জ্যেষ্ঠ জীববিজ্ঞানী ব্রায়ান ফ্রাই দলটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

ইকুয়েডরের বামেনো রিজিওনের বাইহুয়েইরি ওয়াওরানি এলাকার আমাজন জঙ্গলে ১০ দিন ধরে সন্ধান শেষে এই নর্দার্ন গ্রিন অ্যানাকোন্ডার দেখা পাওয়া গেছে শুক্রবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন অধ্যাপক ব্রায়ান ফ্রাই।

প্রসঙ্গত, অ্যানাকোন্ডা নির্বিষ প্রজাতির সাপ। এই সাপটির সবচেয়ে বড় অস্ত্র এটির শক্তিশালী দেহ এবং চাপ। শিকার ধরার পর প্রথমে এটি কয়েলের মতো জড়িয়ে ধরে সেটিকে, তারপর দেয় ভয়াবহ শক্তিশালী চাপ। সেই চাপেই শিকারের হাড়-গোড় ভেঙে অভ্যন্তরীণ সব অঙ্গপ্রত্যঙ্গ অকেজো হয়ে যায়। তারপর শিকারকে গিলে খায় সাপটি। আমাজন জঙ্গলের নদনদী, জলাশয়, জলাভূমিতে সাপটির দেখা মেলে।

দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের ৯টি দেশজুড়ে বিস্তৃত আমাজন জঙ্গল। এই অরণ্যের ৬০ শতাংশ রয়েছে ব্রাজিলে, ১৩ শতাংশ পেরুতে এবং বাকি ২৭ শতাংশ কলম্বিয়া, ভেনেজুয়েলা, ইকুয়েডর, বলিভিয়া, গায়ানা, সুরিনাম ও ফ্রেঞ্চ গায়ানায় অবস্থিত।

শুক্রবারের বিবৃতিতে ব্রায়ান ফ্রাই বলেন, ‘অ্যানাকোন্ডার নতুন এই প্রজাতিটি সত্যিই চমৎকার এবং রীতিমতো অবিশ্বাস্য। প্রাথমিক গবেষণায় আমরা জানতে পেরেছি, এক সময় সাউদার্ন অ্যানাকোন্ডা এবং এবং নতুন এই নর্দার্ন অ্যানাকোন্ডার পূর্বপুরুষ এক ছিল। আজ থেকে প্রায় ১ কোটি বছর আগে তারা আলাদা হয়ে যায়। বর্তমানে এরা সর্ম্পূর্ণ ভিন্ন প্রজাতির সাপ।’