১০০ টাকার ওপরের সব বড় নোট বাতিল চেয়ে ভারতের রাজধানী দিল্লির হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছেন এক ব্যক্তি। দেশকে দুর্নীতিমুক্ত করতে ১০০ টাকার ওপরের কোনও নোট বাজারে না রাখার দাবি জানিয়েছেন তিনি।
মামলা গ্রহণ করে এ বিষয়ে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নেতৃত্বাধীন সরকার ও দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সরকারের মতামত জানতে চেয়েছে দিল্লি হাইকোর্ট
পশ্চিমবঙ্গের বাংলা দৈনিক আনন্দবাজার বলছে, শুধু ১০০ টাকার ওপরের ব্যাংক নোট সম্পূর্ণ তুলে নেওয়াই নয়, বরং নগদ ১০ হাজার টাকার বেশি লেনদেন করার ওপর নিষেধাজ্ঞারও আবেদন জানানো হয়েছে ওই মামলায়। পাশাপাশি ৫০ হাজার টাকার বেশি মূল্যের সম্পত্তির ক্ষেত্রে আধার কার্ড সংযুক্তিকরণ বাধ্যতামূলক করার দাবি জানানো হয়েছে।
মামলাকারী দিল্লি হাইকোর্টের আইনজীবী অশ্বিনীকুমার উপাধ্যায়ের দাবি, আর্থিক দুর্নীতিতে রাশ টানতে এই তিনটি পদক্ষেপ নিতেই হবে। তিনি বলেছেন, ‘ভারতের স্বাধীনতার ৭৫ বছর পর একটি সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র হওয়ার ৭৩ বছর কেটে গেলেও (দেশের) কোনও একটি জেলাও ঘুষ, কালো টাকা, বেনামি লেনদেন, হিসাব-বহির্ভূত সম্পদ, কর ফাঁকি অথবা আর্থিক প্রতারণা থেকে মুক্ত হতে পারেনি।’
এই সমস্যার সমাধান হিসাবে আদালতের কাছে বিমান বা রেল টিকিট, বিদ্যুতের ও গ্যাসের বিলের মতো যাবতীয় বিল ১০ হাজার টাকার বেশি হলে তা নগদে জমা দেওয়া বন্ধ করে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন আইনজীবী অশ্বিনীকুমার। এমনকি, ফ্লিপকার্ট বা অ্যামাজনের মতো অনলাইন শপিংয়ের ক্ষেত্রেও নগদে কেনাকাটায় বিধিনিষেধের আবেদন করেছেন তিনি।
অশ্বিনীর পরামর্শ, হিসাব-হির্ভূত সম্পদের অধিকারী, বেনামে লেনদেনকারী এবং কালোবাজারিতে যুক্ত ব্যক্তিদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে যাবজ্জীবন কারাবাসের সাজা দেওয়া হোক।
আদালতে আবেদনকারীর দাবি, এতে কালোবাজারি থেকে বেনামে অর্থ লেনদেন রোখা যাবে। এ বিষয়ে কেন্দ্র এবং দিল্লি সরকারের কী মত, বুধবার তা জানতে চেয়েছে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি সতীশচন্দ্র শর্মা এবং বিচারপতি তুষার রাও গেদেলার বেঞ্চ। আগামী আগস্টে এই বিষয়ে বিস্তারিত শুনানির জন্য মামলাটি তালিকাভুক্ত করতে চেয়েছে হাইকোর্ট।
এর আগে, ২০১৬ সালের ৮ নভেম্বর থেকে রাতারাতি নোটবন্দির ঘোষণা দিয়েছিলেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ওই নির্দেশের জেরে ৫০০ এবং ১ হাজার টাকার তৎকালীন সব নোট বাতিল করে দেওয়া হয়েছিল। মোদি সরকারের দাবি ছিল, কালোবাজারি তথা আর্থিক দুর্নীতি রুখতে এই পদক্ষেপ কার্যকরী হবে। যদিও দেশটিতে এই সিদ্ধান্তের বাস্তব ফল নিয়ে বিতর্ক রয়েছে।