ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে রাশিয়ার প্রতি শাস্তিমূলক পদক্ষেপ হিসেবে দেশটির জ্বালানি তেল কেনা বন্ধ করেছে ইউরোপ। তাতে অবশ্য তেমন সমস্যায় পড়তে হয়নি দেশটিকে, কারণ ইউরোপের বিভিন্ন দেশ তেল কেনা বন্ধ করতেই এশিয়ায় নিজেদের তেলের নতুন বাজার তৈরি করেছে রাশিয়া।
বর্তমানে সেই বাজার চলছে ব্যাপক সতেজভাবে। এক প্রতিবেদনে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ জানিয়েছে, বর্তমানে রাশিয়ার রপ্তানি করা তেলের দুই তৃতীয়াংশই কিনছে এশিয়ার ৫ দেশ— চীন, ভারত, সংযুক্ত আরব আমিরাত, তুরস্ক ও শ্রীলঙ্কা।
ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৪ অক্টোবর থেকে ১১ নভেম্বর— ২৮ দিনে এই ৫ দেশে গড়ে প্রতিদিন ২৩ লাখ ৯০ হাজার ব্যারেল অপরিশোধিত জ্বালানি তেল রপ্তানি করেছে রাশিয়া। ১৫৯ লিটার পরিমাণ তরল বস্তুকে এক ব্যারেল হিসেবে ধরা হয়।
ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর আগে রাশিয়ার জ্বালানি তেলের সবচেয়ে বড় ক্রেতা ছিল ইউরোপ। সে রাশিয়ার মোট রপ্তানি করা তেলের ৫ ভাগের ২ ভাগের ক্রেতা ছিল এশিয়া; কিন্তু ইউক্রেনের যুদ্ধ এই বাজার উল্টে দিয়েছে।
ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুদ্ধের আগে থেকেই রুশ তেলের ক্রেতা ছিল চীন। যুদ্ধ শুরুর পর ভারতও রাশিয়ার অপরিশোধিত তেল কেনা শুরু করে। বর্তমানে এই দু’টি দেশেই সবচেয়ে বেশি জ্বালানি তেল রপ্তানি করছে রাশিয়া। পরে রুশ তেলের ক্রেতার তালিকায় যুক্ত হয় তুরস্ক, শ্রীলঙ্কা ও আমিরাতও।
রাশিয়ার তেলের ওপর ইউরোপের নিষেধাজ্ঞা পুরোপুরি কার্যকর হবে ডিসেম্বর মাসের শেষের দিকে।
ইউরোপের দেশগুলোর জোট ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) ঘোষণা অনুযায়ী, ডিসেম্বরের শেষ থেকে রাশিয়ার জ্বালানি তেল কেনা সম্পূর্ণ বন্ধ করা হবে, তার আগে ধাপে ধাপে কমানো হবে তেলক্রয়।
সেই প্রক্রিয়া শুরুও হয়ে গেছে। ব্লুমবার্গের প্রতিবেদন বলছে, ১৪ অক্টেবর থেকে ১১ নভেম্বর পর্যন্ত ইউরোপে প্রতিদিন গড়ে ৭ লাখ ব্যারেল তেল কম রপ্তানি করেছে রাশিয়া।