মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির জ্যেষ্ঠ দুই নেতার বিতর্কিত মন্তব্যের নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) মহানবীকে (সা.) নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্যের নিন্দা জানায় দেশটি। শুক্রবার (১৭ জুন) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র নেড প্রাইস সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা বিজেপির দুই নেতার করা আপত্তিকর মন্তব্যের নিন্দা জানাচ্ছি এবং দলটি প্রকাশ্যে সেই মন্তব্যগুলোর নিন্দা করেছে, যা দেখে আমরা আনন্দিত।’
তিনি আরও বলেন, ‘ধর্ম বা বিশ্বাসের স্বাধীনতা-সহ মানবাধিকার সংক্রান্ত বিষয়ে যেসব উদ্বেগ রয়েছে, সেসব বিষয়ে আমরা ভারত সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সঙ্গে নিয়মিতভাবে সংশ্লিষ্ট রয়েছি এবং মানবাধিকারের প্রতি সম্মান দেখাতে ভারতকে আমরা উৎসাহিত করছি।’
প্রসঙ্গত, ভারতের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) সাবেক মুখপাত্র নুপুর শর্মা এক টেলিভিশন শোতে অংশ নিয়ে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে বিতর্কিত ওই মন্তব্য করেছিলেন। পরে দলটির নয়াদিল্লি শাখার গণমাধ্যম প্রধান নবীন জিন্দালও নুপুর শর্মার মন্তব্যের সমর্থনে টুইট করেন।
তাদের এই মন্তব্য দেশটির সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়কে ক্ষুব্ধ করে তোলে। এমনকি অভিযুক্তদের মন্তব্যের জেরে ভারতের কয়েকটি রাজ্যের মুসলিমরা বিক্ষিপ্তভাবে প্রতিবাদ বিক্ষোভ করেন। আর এর রেশ ভারতের গণ্ডি ছাড়িয়ে বাইরের বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে।
বিতর্কিত ওই মন্তব্যের জেরে মুসলিম বিশ্বের ক্রমবর্ধমান ক্ষোভ ও তোপের মুখেও পড়ে ভারত। মধ্যপ্রাচ্যের প্রভাবশালী দেশগুলোসহ বিশ্বের অন্তত দেড় ডজন দেশ ভারতের বিরুদ্ধে সরব হয়। অবশ্য এরপরই অনেকটা নড়েচড়ে বসে বিজেপি।
পরিস্থিতি বিবেচনায় বিজেপি অভিযুক্ত নুপুর শর্মাকে বরখাস্ত এবং জিন্দালকে বহিষ্কার করে। পরে বিজেপির এই দুই নেতা প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়ে বিবৃতিও দিয়েছেন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি বলছে, ১৯৯০ এর দশকের শেষের দিক থেকে ভারতের সাথে সম্পর্ক গভীর করার চেষ্টা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ওয়াশিংটন বিশ্বাস করে যে, বিশ্বের এই দু’টি বৃহত্তম গণতন্ত্রের অভিন্ন স্বার্থ রয়েছে। বিশেষ করে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব মোকাবিলায় এই দেশ দু’টির স্বার্থ একই।
তবে এরপরও অবশ্য ভারতে মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে বেশ কয়েকবার উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।