জেনারেল কাশেম সোলেইমানিকে ড্রোন হামলা চালিয়ে হত্যার দায়ে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর কয়েক ডজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ইরান। ২০২০ সালে ইরাকের বাগদাদের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে ড্রোন হামলায় ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর কুদস ফোর্সের শীর্ষ ওই জেনারেলকে হত্যার দায়ে এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে বলে শনিবার জানিয়েছে তেহরান।
দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, সন্ত্রাসবাদ এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে ৫১ আমেরিকান সামরিক কর্মকর্তাকে টার্গেট করা হয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞার ফলে ইরানে থাকা মার্কিন কর্মকর্তাদের কোনও সম্পদ থাকলে তা ইরানি কর্তৃপক্ষ বাজেয়াপ্ত করতে পারবে। তবে ইরানে মার্কিন কর্মকর্তাদের সম্পদ না থাকায় এই নিষেধাজ্ঞা প্রতীকী ব্যবস্থা বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তেহরানের স্থানীয় গণমাধ্যমে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতির বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, জেনারেল কাশেম সোলেইমানি এবং তার সহযোগীর বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সন্ত্রাসবাদী ভূমিকায় সংশ্লিষ্টতা এবং সন্ত্রাসবাদ ও মৌলিক মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে ওই ৫১ জনের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর অভিজাত শাখা কুদস ফোর্সের কমান্ডার জেনারেল কাশেম সোলেইমানি, যিনি এই বাহিনীর বৈশ্বিক কর্মকাণ্ডের নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন; তাকে ২০২০ সালের ৩ জানুয়ারি ইরাকে ড্রোন হামলা চালিয়ে হত্যা করে মার্কিন সামরিক বাহিনী। পরে দেশটির তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দেন, তার নির্দেশেই সোলেইমানিকে হত্যা করা হয়েছে।
ইরানের নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকা মার্কিন সামরিক কর্মকর্তাদের মধ্যে আছেন জয়েন্ট চিফস অব স্টাফের চেয়ারম্যান জেনারেল মার্ক মিলি, হোয়াইট হাউসের সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা রবার্ট ও’ব্রায়েন।
সন্ত্রাসী এবং মানবতাবিরোধী কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে এক বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং অন্য কয়েকজন জ্যেষ্ঠ মার্কিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে একই ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল তেহরান।
গত সপ্তাহে জেনারেল সোলেইমানি হত্যাকাণ্ডের দ্বিতীয় বার্ষিকীতে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহীম রাইসি বলেন, এই হত্যাকাণ্ডের জন্য ট্রাম্পকে অবশ্যই বিচারের মুখোমুখি হতে হবে, নতুবা তেহরান প্রতিশোধ নেবে।
২০১৫ সালে বিশ্ব শক্তির দেশগুলোর সঙ্গে স্বাক্ষরিত ইরানের পারমাণবিক চুক্তি থেকে ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর সেই সময় ইরানের কয়েক ডজন কর্মকর্তা-রাজনীতিক এবং বিভিন্ন কোম্পানির বিরুদ্ধে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ট্রাম্প প্রশাসন।
মৃতপ্রায় সেই পারমাণবিক চুক্তি পুনরুজ্জীবিত করতে সম্প্রতি ভিয়েনায় যুক্তরাষ্ট্র এবং ইরানের মধ্যে পরোক্ষ আলোচনা শুরু হয়েছে।
-সূত্র: রয়টার্স।