<< মিয়ানমারকে ‘সঠিক পথে’ আনতে আরও কঠোর হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

মিয়ানমারকে ‘সঠিক পথে’ আনতে বাড়তি আরও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া যায় কি না- তা বাইডেন প্রশাসন বিবেচনা করছে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন। বুধবার মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে এক বক্তব্যে এ তথ্য জানান তিনি।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হওয়ার পর এই প্রথম দক্ষিণপূর্ব এশিয়া সফরে যাওয়া ব্লিনকেন আরও বলেছেন, এশিয়ার এই এলাকার দেশগুলোর আঞ্চলিক সংস্থা আসিয়ানের সঙ্গে বৈঠক করার জন্যও আগ্রহী যুক্তরাষ্ট্রের সরকার।

মিয়ানমার প্রসঙ্গে বুধবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘দেশটিকে গণতন্ত্রের পথে ফিরিয়ে আনতে অতিরিক্ত কী কী পদক্ষেপ নেওয়া তা বের করা গুরুত্বপূর্ণ। সেখানকার সামরিক সরকারকে চাপে রাখতে আগামী সপ্তাহ ও মাসগুলোতে আমরা একক ও সম্মিলিতভাবে এমন কিছু পদক্ষেপ নিতে পারি কি না- তা মার্কিন সরকারের বিবেচনাধীনে আছে।’

চলতি বছর ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন গণতান্ত্রিক সরকারকে উচ্ছেদ করে মিয়ানমারের জাতীয় ক্ষমতায় আসীন হয় দেশটির সামরিক বাহিনী। সেনাপ্রধান মিন অং হ্লেইং এই অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দেন।

অভ্যুত্থানের পরপরই কারাবন্দি করা হয় সু চি ও তার দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্র্যাসির (এনএলডি) বিভিন্ন স্তরের ১০ হাজারেরও বেশি নেতা-কর্মীকে। জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা বার বার আহ্বান সত্ত্বেও সু চি ও তার দলের নেতা-কর্মীদের মুক্তি দিচ্ছে না সামরিক সরকার।

২০১৭ সালে মিয়ানামারের সেনাবাহিনী দেশটির সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর যে নিধনযজ্ঞ চালিয়েছিল, মঙ্গলবারের বক্তব্যে সে বিষয়েও আলোকপাত করেছেন ব্লিনকেন। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘মিয়ানমারের সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের সঙ্গে যা করেছে, তাকে গণহত্যা হিসেবে ঘোষণা করা যায় কিনা তাও খতিয়ে দেখছে যুক্তরাষ্ট্র।’

সেনাবাহিনীর নির্বিচার হত্যা-ধর্ষণ-নিপীড়ণ-অগ্নিসংযোগ থেকে জীবন বাঁচাতে ২০১৭ সালে মিয়ানমারের আরাকান রাজ্য থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন সাড়ে ৭ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা। এই রোহিঙ্গাদের ফের মিয়ানমার ফেরত নেবে কিনা তা এখনও অনিশ্চিত।

রোহিঙ্গাদের ওপর ব্যাপক নিপীড়ণ ও হত্যার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা অনেক দেশ তখনই মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী, তাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল।

১ ফেব্রুয়ারির অভ্যুত্থানের পর সেই নিষেধাজ্ঞা আরও কঠোর করা হয়। এই তালিকায় থাকা নাম ও প্রতিষ্ঠানের সংখ্যাও দিন দিন বাড়ছে।

এদিকে, দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার রাজনীতি সম্পর্কে মার্কিন সরকারের আগ্রহের বিষয়টি মঙ্গলবার (১৪ ডিসেম্বর) জাকার্তায় দেওয়া বক্তব্যে জানিয়েছিলেন অ্যান্টনি ব্লিনকেন। তার জের ধরে বুধবার কুয়ালালামপুরে তিনি বলেন, ‘আগামী বছর আসিয়ানের সঙ্গে বিশেষ সম্মেলন করার দিকে তাকিয়ে আছি আমরা।’

ব্লিনকেনের এই প্রস্তাবের জবাবে সেখানে উপস্থিত মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন আবদুল্লাহ জানান, আসিয়ানভুক্ত দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা আগামী ১৯ জানুয়ারি এক বৈঠকে বাইডেনের আমন্ত্রণ নিয়ে আলোচনা করবেন। সেখানেই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

সূত্র: রয়টার্স