মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মধ্যে সৌদি আরবে প্রথম করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রনের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। উত্তর আফ্রিকা থেকে ফেরা দেশটির এক নাগরিকের শরীরে করোনার নতুন এই ভ্যারিয়েন্ট নিশ্চিত করেছে সৌদি। বুধবার দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে ফরাসি বার্তাসংস্থা এএফপি।
সৌদির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ সংস্থা সৌদি প্রেস এজেন্সিকে মন্ত্রণালয়ের ওই কর্মকর্তা বলেছেন, ‘সৌদি আরবে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের প্রথম সংক্রমণ শনাক্ত করা হয়েছে। উত্তর আফ্রিকার একটি দেশ থেকে আসা একজন নাগরিকের এই ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে।’
‘বর্তমানে তাকে এবং তার সংস্পর্শে আসা লোকজনকে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।’
গত সপ্তাহে সৌদি আরবসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ দক্ষিণ আফ্রিকা অঞ্চলের সাথে বিমান চলাচল স্থগিত ঘোষণা করে। তবে উত্তর আফ্রিকা অঞ্চলের সাথে বিমান চলাচল চালু রেখেছিল সৌদি।
করোনাভাইরাস মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে সৌদি আরবে এখন পর্যন্ত ৫ লাখ ৪৯ হাজারের বেশি মানুষের করোনা শনাক্ত হয়েছে এবং তাদের মধ্যে মারা গেছেন ৮ হাজার ৮৩৬ জন। প্রায় সাড়ে তিন কোটি মানুষের এই দেশটিতে ৪ কোটি ৭০ লাখের বেশি ডোজ করোনা ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে।
গত ২৪ নভেম্বর করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ‘ওমিক্রন’ দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম শনাক্ত হয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বললেও তারও অনেক আগে বিশ্বের কিছু দেশে এই ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতির তথ্য সামনে আসছে।
বুধবার নাইজেরিয়া বলেছে, তারা ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের প্রথম সংক্রমণ শনাক্ত করেছে। গত অক্টোবরে নাইজেরিয়ায় আসা তিন দর্শনার্থীর নমুনায় এই ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে। এর অর্থ—দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম শনাক্ত হয়েছে বলে জানানো হলেও আসলে এই ভ্যারিয়েন্ট তারও কয়েক সপ্তাহ আগে অন্যান্য দেশে উপস্থিত ছিল।
এছাড়া নেদারল্যান্ডসের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর পাবলিক হেলথ (আরআইভিএম) বলেছে, গত ২৬ নভেম্বর দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গ এবং কেপটাউন থেকে আমস্টারডামের শিফল বিমানবন্দরে আসা দু’টি ফ্লাইটের অন্তত ১৪ জন আরোহী করোনাভাইরাসের নতুন ধরনটি বহন করে নিয়ে এসেছেন।
‘কিন্তু আমরা তারও আগে গত ১৯ এবং ২৩ নভেম্বর সংগ্রহ করা দু’টি নমুনা পরীক্ষায় করোনাভাইরাসের ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট পেয়েছি। তবে এই দুই ব্যক্তি দক্ষিণ আফ্রিকা সফর করেছিলেন কি-না তা এখনও পরিষ্কার নয়’, আরআইভিএমের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে।
করোনার নতুন এই প্রজাতির বিষয়ে বিস্তারিত জানার জন্য বিশ্বজুড়ে বিজ্ঞানীরা রীতিমতো প্রতিযোগিতা করছেন। এই ভ্যারিয়েন্ট আবিষ্কার হওয়ার পর বিশ্বের অন্তত ৭০টি দেশ আফ্রিকার কয়েকটি দেশ ও অঞ্চলের বিরুদ্ধে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
সূত্র: এএফপি, রয়টার্স।