হ্যারিকেন আইদার প্রভাবে অতি বর্ষণের জেরে বন্যাজনিত জরুরি অবস্থা (ফ্ল্যাশ ফ্লাড ইমার্জেন্সি) জারি করা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরে। দেশটির সংবাদমাধ্যম এনবিসি নিউজ জানিয়েছে, বুধবার মধ্যরাত থেকে ভারী বর্ষণ হচ্ছে নিউ ইয়র্কে, এর মধ্যে হয়ে গেছে একটি টর্নেডোও।
শহরের বৃহত্তম ও প্রধান পৌরসভা নিউইয়র্ক সিটির মেয়র বিল ডি ব্লাসিও নগরবাসীকে বাড়ি থেকে বের না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। এছাড়া, নিউইয়র্কের অধিভূক্ত ৫ টি পৌরসভাতেও একই নির্দেশ জারি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে শহরের ফায়ার সার্ভিস বিভাগ।
এক টুইটবার্তায় বিল ডি ব্লাসিও বলেন, ‘আমরা বর্তমানে একটি ঐতিহাসিক প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখে পড়েছি। পুরো শহরজুড়ে নজিরবিহীন বৃষ্টিপাত হচ্ছে এবং এর ফলে সৃষ্ট ধ্বংসাত্মক বন্যায় আমাদের সড়কগুলো বিপজ্জনক অবস্থায় আছে। এ অবস্থায় নগরবাসীকে ঘরে থাকার আহ্বান জানাচ্ছে নগর কর্তৃপক্ষ।’
বুধবার রাত সাড়ে ১১ টার দিকে যখন এই টুইট করেন ডি ব্লাসিও, সে সময় অতি বর্ষণজনিত কারণে নিউইয়র্ক সিটির অধিকাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় আবহাওয়া অধিদফতর ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিস জানিয়েছে, শহরের সেন্ট্রাল পার্ক এলাকায় এক ঘণ্টায় ৩ দশমিক ১৫ ইঞ্চি রেকর্ড করা হয়েছে। ফায়ার সার্ভিস বিভাগ জানিয়েছে, নিউইয়র্ক সিটিসহ শহরের অধিভূক্ত ৫ টি পৌরসভা থেকেই উদ্ধার বিষয়ক সহায়তা চেয়ে ফোন করছেন বিপদগ্রস্তরা।
শহরটির পাতাল রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অতি বর্ষণ ও বন্যাজনিত কারণে পাতাল রেলসেবা প্রায় বন্ধ অবস্থায় আছে। এছাড়া শহরের দুই প্রধান বিমানবন্দর লা গুয়ারদিয়া এবং জেএফকে ইতোমধ্যে সব অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক ফ্লাইট স্থগিত করেছে।
নগরবাসীকে সতর্ক করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় আবহাওয়া দফতর। সেখানে দেখা যাচ্ছে, অতি বৃষ্টির প্রভাবে প্রায় নদীতে রূপ নেওয়া রাস্তায় ঠায় দাঁড়িয়ে আছে গাড়িগুলো। নিউইয়র্ক শহরের কুইন্স পৌরসভার চিত্র এটি।
ভিডিওটি টুইট করে আবহাওয়া দফতর সতর্কবার্তায় বলেছে, ‘এই পানি যথেষ্ট গভীর। যদি ডুবতে না চান, গাড়ি ঘুরিয়ে নিন।’
পৃথক এক টুইটে এ সম্পর্কে নিউইয়র্কের মেয়র ডি ব্লাসিও বলেন, ‘নগরবাসীকে অনুরোধ করা হচ্ছে, দয়া করে সড়ক ও পাতাল রেল ব্যবহার বিরত রাখুন এবং ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের কাজে সহায়তা করুন। যদি আজ রাতে আপনাদের কারো বের হওয়ার পরিকল্পনা থাকে, তাহলে তা বাতিল করুন এবং এই প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যে কোনোভাবেই গাড়ি চালানোর ঝুঁকি নেবেন না।’