আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ নানগাহারে আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসের ঘাঁটিতে ড্রোন হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। হামলায় একজন আইএস সদস্যের নিহত হয়েছেন, যিনি আইএসের আফগানিস্তান শাখার একজন পরিকল্পনাকারী (মাস্টারমাইন্ড) ছিলেন বলে জানা গেছে।
বিবিসি ও সিএনএনকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন দেশটির সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তারা। শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্র সেনা বাহিনীর মুখপাত্র ক্যাপ্টেন বিল আরবান এক বিবৃতিতে বলেন, ‘মার্কিন সামরিক বাহিনী আজ আইএস-কে (খোরাসান) ঘাঁটিতে হামলা করেছে। আফগানিস্তানের নানগাহার প্রদেশে এই হামলা চালানো হয়েছে।’
‘আইএস-কে’র একজন মাস্টারমাইন্ডকে লক্ষ্য করে এই হামলা পরিচালনা করা হয়েছিল। প্রাথমিক ইঙ্গিতসমূহ বলছে, আমরা টার্গেটকে হত্যা করতে সক্ষম হয়েছি। কোনো বেসামরিক মানুষ এই হামলায় হতাহত হয়েছেন- এমন সংবাদ পাওয়া যায়নি।’
বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টার দিকে কাবুলের হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকায় পরপর দু’ টি বিস্ফোরণ ঘটে। প্রথম বিস্ফোরণটি হয় বিমানবন্দরের অ্যাবেই গেটের কাছে, যেখানে মার্কিন ও ব্রিটিশ বাহিনী বিমানবন্দরের দায়িত্বে ছিলেন। হামলার পর গোলাগুলিও হয়েছে সেখানে।
এর কিছুক্ষণ পরেই দ্বিতীয় বিস্ফোরণ ঘটে বিমানবন্দরের পার্শ্ববর্তী ব্যারন হোটেলের পাশে, যেখানে ব্রিটিশ কর্মকর্তারা যুক্তরাজ্যে ভ্রমণ প্রত্যাশী আফগানদের প্রয়োজনীয় সহায়তা দিচ্ছিলেন।
ভয়াবহ সেই হামলায় এখন পর্যন্ত ১৭০ জন মানুষ মারা গেছেন বলে জানিয়েছে বিবিসি, সিএনএনসহ কয়েকটি প্রথম সারির আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম। এছড়া আহত হয়েছেন আরও কয়েকশ’।
নিহতদের মধ্যে ১৩ জন মার্কিন সেনা সদস্য আছেন, বাকিরা সবাই বেসামরিক আফগান নাগরিক।
হামলার এই ঘটনায় বৃহস্পতিবারই ব্যাপক ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, ‘আমরা ক্ষমা করবো না, এই হামলার কথা ভুলেও যাবো না। হামলাকারীদের অবশ্যই খুঁজে বের করবো এবং জড়িতদেরকে এর মূল্য দিতে হবে।’
যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর এক কর্মকর্তা সিএনএনকে জানিয়েছেন, বিমানবন্দরে হামলার পর সেনা কর্মকর্তারা আফগানিস্তানে আইএস ঘাঁটিতে হামলার অনুমোদন চাইলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট তা অনুমোদন করেন। তারপরই নানগাহারে ড্রোন হামলা চালানো হয়।
শুক্রবার হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি জেন সাকি এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, কাবুলে ফের সন্ত্রাসী হামলা হতে পারে বলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসকে জানিয়েছেন দেশটির গোয়েন্দা কর্মকর্তারা।
এর জেরে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে বিমানবন্দরের বিভিন্ন গেটে অবস্থান করা মার্কিন নাগরিকদের অবিলম্বে সেখান থেকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কাবুলের মার্কিন দূতাবাস।
সূত্র : বিবিসি, সিএনএন