<< দৈনিক সংক্রমণে শীর্ষে ফের যুক্তরাষ্ট্র, মৃত্যুতে ইন্দোনেশিয়া

মহামাারি শুরুর পর থেকে করোনায় মোট আক্রান্ত ও মৃত্যুর হিসেবে বিশ্বের দেশসমূহের মধ্যে শীর্ষে থাকা দেশ যুক্তরাষ্ট্রে ফের বাড়ছে এ রোগের সংক্রমণ। বুধবার দৈনিক আক্রান্তের হিসেবে বিশ্বের দেশসমূহের মধ্যে সবচেয়ে বিপর্যয়কর অবস্থায় ছিল যুক্তরাষ্ট্র।

অন্যদিকে, এই দিন প্রাণঘাতী এ রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর হিসেবে বিশ্বের দেশসমূহের মধ্যে শীর্ষে ছিল দক্ষিণ এশিয়ায় করোনার উপকেন্দ্র (এপিসেন্টার) হিসেবে পরিচিতি পাওয়া দেশ ইন্দোনেশিয়া।

মঙ্গলবার থেকে বুধবার- ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে বিশ্বজুড়ে করোনা থেকে সুস্থ হয়ে ওঠা মানুষের সংখ্যাও কমেছে।

মহামারি শুরুর পর থেকে বিশ্বে এ রোগে আক্রান্ত, মৃত্যু ও আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হয়ে ওঠাদের সংখ্যা বিষয়ক হালনাগাদ তথ্য প্রদানকারী ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটার্সের পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, বুধবার বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৬ লাখ ৮০ হাজার ৬৬৯ জন এবং মারা গেছেন ১০ হাজার ৩০ জন। এছাড়া এই দিন করোনা থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৪ লাখ ৩৮ হাজার ৯৫৬ জন ব্যক্তি।

আগের দিন মঙ্গলবার বিশ্বে করোনায় নতুন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ৬ লাখ ১৯ হাজার ৪২ জন এবং মৃতের সংখ্যা ছিল ১০ হাজার ৭৫ জন। ওই দিন করোনা থেকে সুস্থ হয়ে ওঠা মানুষের সংখ্যা ছিল ৪ লাখ ৫৮ হাজার ২৭৬ জন।

অর্থাৎ, ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে বিশ্বজুড়ে নতুন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে ৬১ হাজার ৬২৭, মৃতের সংখ্যা কমেছে ৪৫ এবং করোনা থেকে সুস্থ হয়ে ওঠা মানুষের সংখ্যা কমেছে ১৯ হাজার ৩২০ জন।

ওয়ার্ল্ডোমিটার্সের তথ্য অনুযায়ী, বুধবার যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ১২ হাজার ২৭৯ জন এবং এ রোগে আক্রান্ত হয়ে দেশটিতে মারা গেছেন ৬৫৬ জন।

অন্যদিকে, ইন্দোনেশিয়ায় বুধবার করোনায় মারা গেছেন ১ হাজার ৭৪৭ জন, যা ছিল ওই দিন দৈনিক মৃত্যুর হিসেবে বিশ্বের দেশসমূহের মধ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যক মৃত্যু। পাশাপাশি, বুধবার দেশটিতে করোনায় নতুন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ৩৫ হাজার ৮৬৭ জন।

এছাড়া বুধবার বিশ্বের অন্যান্য যেসব দেশে করোনায় আক্রান্ত-মৃত্যুর উচ্চহার দেখা গেছে সে দেশসমূহ হলো- ব্রাজিল (নতুন আক্রান্ত ৪০ হাজার ৪৬০, মৃত্যু ১ হাজার ১১৮), ভারত (নতুন আক্রান্ত ৪২ হাজার ৮১৭, মৃত্যু ৫৩২), ইরান (নতুন আক্রান্ত ৩৯ হাজার ৩৫৭, মৃত্যু ৪০৯), যুক্তরাজ্য (নতুন আক্রান্ত ২৯ হাজার ৩১২, মৃত্যু ১১৯),  ফ্রান্স (নতুন আক্রান্ত ২৮ হাজার ৩৮৪, মৃত্যু ৫৩), তুরস্ক (নতুন আক্রান্ত ২৬ হাজার ৮২২, মৃত্যু ১২২) এবং রাশিয়া (নতুন আক্রান্ত ২২ হাজার ৫৫৯, মৃত্যু ৭৯০)।

বর্তমানে বিশ্বজুড়ে সক্রিয় করোনা রোগীর আছেন ১ কোটি ৫৭ লাখ ২০ হাজার ২৯৫ জন। তাদের মধ্যে মৃদু উপসর্গ বহন করছেন ১ কোটি ৫৬ লাখ ২৬ হাজার ৬৭৪ জন এবং গুরুতর অসুস্থ আছেন ৯৩ হাজার হাজার ৪২১ জন।

ওয়ার্ল্ডোমিটার্সের তথ্য জানাচ্ছে, মহামারি শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন মোট ২০ কোটি ৯ লাখ ৫৬ হাজার ৯৫২ জন এবং মারা গেছেন মোট ৪২ লাখ ৬৯ হাজার ৬০২ জন এবং এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হয়ে উঠেছেন মোট ১৮ কোটি ৯ লাখ ৬৭ হাজার ৫৫ জন।

২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে বিশ্বের প্রথম করোনায় আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। করোনায় প্রথম মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছিল চীনে।

তারপর অত্যন্ত দ্রুতগতিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে প্রাণঘাতী এই ভাইরাসটি। পরিস্থিতি সামাল দিতে ২০২০ সালের ২০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।

কিন্তু তাতেও এই ভাইরাসটির সংক্রমণ নিয়ন্ত্রনে না আসায় অবশেষে ওই বছর ১১ মার্চ করোনাকে বৈশ্বিক মহামারি হিসেবে ঘোষণা করে ডব্লিউএইচও।