<< ‘সেঞ্চুরি’তে শুরু হলো সাকিবের ‘নতুন ইনিংস’

ক্রিকেটের বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের নতুন ব্যবসার পথচলা শুরু হলো। শেয়ার কেনাবেচায় তার মালিকানাধীন মোনার্ক হোল্ডিংয়ে বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) হিসাব খোলা শুরু হয়েছে। প্রথম দিনই খোলা হয়েছে এক শর বেশি হিসাব।

মঙ্গলবার ব্রোকারেজ হাউসটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের শুরু হয়েছে শেয়ার কেনাবেচাও। তবে মতিঝিলের সিটি সেন্টারের ৩২ তলায় প্রতিষ্ঠানটির করপোরেট কার্যালয়ের কাজ এখনও কিছুটা বাকি।

মোনার্ক হোল্ডিংয়ের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন সাকিব আল হাসান। তবে ব্রোকারেজ হাউসে লেনদেন শুরুর প্রথম দিন তিনি উপস্থিত ছিলেন না।

শেয়ার কেনাবেচার ব্যবসায় আসার আগে সাকিব কাঁকড়া উৎপাদন, স্বর্ণ ও রেস্তোরাঁ ব্যবসায় জড়িয়েছেন। একটি ব্যাংকের উদ্যোক্তাদের একজনও তিনি। তবে তাকে পরিচালক করার প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তিনি পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির শুভেচ্ছাদূত হিসেবেই কাজ করেছেন।

গত বছরের ২১ মে পুঁজিবাজারে ব্রোকারেজ হাউসের (অনুমোদিত শেয়ার কেনাবেচা হাউস) ব্যবসা করার অনুমতি পায় ক্রিকেটের বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার ও পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির শুভেচ্ছাদূত সাকিব আল হাসান।

পুঁজিবাজারে যারা বর্তমানে লেনদেন করছেন তাদের নতুন করে বিও হিসাব খোলা নয়, বরং পুঁজিবাজারের জন্য নতুন বিনিয়োগকারী ‍নিয়ে আসা তাদের প্রধান উদ্দেশ্য বলে জানিয়েছেন মোনার্ক হোল্ডিংয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আলমগীর হোসেন।

‘সেঞ্চুরি’তে শুরু সাকিবের ‘নতুন ইনিংস’মতিঝিলে সাকিবের ব্রোকারেজ হাউস মোনার্ক হোল্ডিংয়ের কার্যালয়

তিনি বলেন, ‘মঙ্গলবার থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে লেনদেন শুরু হলেও বিও হিসাব খোলা হচ্ছে সোমবার থেকেই। এ সময় এক শর বেশি বিও হিসাব খোলা হয়েছে।

‘আমাদের যে লাইসেন্স দেয়া হয়েছে তাতে খুব বেশি ব্যবসা সম্প্রসারিত হওয়ার সুযোগ নেই। আমাদের ব্রোকার সার্ভিস ও ডিলার লাইসেন্সের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। ডিলার অ্যাকাউন্টে আমাদের ভালো টাকা আছে।’

এই হাউসে কমিশন অন্যান্য হাউসের তুলনায় কম থাকবে বলে জানিয়েছেন এই কর্মকর্তা, যদিও কমিশনের হার কত সেটি জানাননি।

তিনি বলেন, ‘প্রতিযোগিতামূলক বাজারে বিনিয়োগকারীদের সহনীয় কমিশন হার নির্ধারণ করা হয়েছে। কমিশনের বিপরীতে মুনাফা করার কোনো ইচ্ছা নেই।’

বিনিয়োগকারীদের মূলধনের বিপরীতে মার্জিন ঋণ নামে যে ঋণ দেয়া হয়, তা আপাতত দেয়া হচ্ছে না এই হাউসে। তবে শিগগির এই সুবিধাও দেয়া হবে।

আলমগীর হোসেন বলেন, ‘আমাদের প্রধান উদ্দেশ থাকবে বিনিয়োগকারীদের পুঁজিবাজার সম্পর্কে পরিপূর্ণ ধারণা দেয়া, পুঁজিবাজারের কোম্পানিগুলো সম্পর্কে বিনিয়োগকারীদের স্পষ্ট চিত্র উপস্থাপন করা, যাতে বিনিয়োগকারীরা তথ্য-চিত্র দেখে বিনিয়োগে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। ডিজিটাল বুথ ও শাখা সম্প্রসারণের ক্ষেত্রেও আমরা প্রথমেই বিনিয়োগকারীদের পুঁজিবাজার সম্পর্কে সচেতন করাকে বেশি গুরুত্ব দেব।’

গত বছরের ৪ সেপ্টেম্বর নতুন ৫৫টি ব্রোকারেজ হাউস বা ট্রেককে (ট্রেডিং রাইট এনটাইটেলমেন্ট সার্টিফিকেট) লাইসেন্স দেয় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)।

সেখান থেকে গত ৩০ জানুয়ারি ডিএসই ওয়েবসাইটে চারটি ব্রোকারেজ হাউসকে স্টক ব্রোকার রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট, তিন ডিজিটের আইডি এবং ছয় ডিজিটের নম্বর দেয়া হয়েছে বলে জানানো হয়। এগুলো হচ্ছে থ্রি আই সিকিউরিটিজ, রহমান ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্ট, মোনার্ক হোল্ডিং ও সোনালী সিকিউরিটিজ।

মঙ্গলবার পর্যন্ত সোনালী সিকিউরিটিজ বাদে বাকি তিনটি ব্রোকারেজ হাউসের কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

নতুন করে ট্রেক বা ব্রোকারেজ হাউসের সার্টিফিকেট পেতে ৬৬টি প্রতিষ্ঠান আবেদন করে। এখান থেকে ডিএসই ১৫টি প্রতিষ্ঠানের আবেদন বাতিল করে ৫১টি প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন দিতে বিএসইসির কাছে পাঠায়। পরে আরও ৪টি প্রতিষ্ঠান যুক্ত করা হয়।

গত ২০ জানুয়ারি আরও তিনটি ব্রোকারেজ হাউস অনুমোদন পাওয়ায় এখন এ তালিকা বেড়ে হয়েছে ৫৮টি। এতে ডিএসইর সদস্যভুক্ত ব্রোকারেজ হাউস বা ট্রেকের সংখ্যা দাঁড়াবে ২৮৩টিতে।