শাহরুখ খান ও প্রীতি জিনতা অভিনীত ‘ভিরজারা’ সিনেমার কথা অনেকেরই মনে পড়তে পারে। ২০০৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত সে সিনেমার পরিচালক ছিলেন যশ চোপড়া। সিনেমাটি সে সময় বিপুল জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। তবে নায়ক-নায়িকা ভির আর জারা ছাড়াও শাব্বো চরিত্রে নজর কেড়েছিলেন বাংলার মেয়ে দিব্যা দত্ত। এই সিনেমায় কাজ করা নিয়ে শুরুতে সংশয়ে ছিলেন তিনি, মায়ের কথাতেই শেষ অবধি সুযোগটা গ্রহণ করেন।
এক সাক্ষাৎকারে দিব্যা বলেন, চার বছর বয়স থেকেই অভিনেত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখতাম আমি। অমিতাভ বচ্চনকে ভালো লাগত। আমি জানতাম নিজেকে আমি কোথায় দেখতে চাই। স্বপ্ন দেখতাম, যশ চোপড়া পরিচালিত সিনেমায় অভিনয় করে সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার পেয়েছি।
দিব্যা জানান, ইন্ডাস্ট্রিতে এসে তারকাদের ভিড়ে নিজেকে হারিয়ে ফেলেছিলেন তিনি। ভাবতেন, নিজের অস্তিত্ব প্রমাণ করতে পারবেন না। বড় তারকাদের একাধিক নায়িকার মধ্যে তিনিও কখনও হয়েছেন একজন। কিছু দৃশ্য থাকত, গোটা দুয়েক রোম্যান্টিক গান থাকত। তার মনে হতো, নিছক এই জন্যেই তিনি কাজ করতে আসেননি।
দিব্যার কথায়, যখন আমি ‘ভিরজারা’ সিনেমায় ডাক পেলাম, ভেতরে ভেতরে উত্তেজনা টের পাই। মনে হয়েছিল, এ বার ঠিকঠাক করে আত্মপ্রকাশ করা যাবে। গল্পটা পড়ে জানলাম। একেবারে মুগ্ধ হয়ে গেলাম। নির্মাতারা জানান, সিনেমায় শাহরুখ, প্রীতি, রানি, মিস্টার বচ্চন ও হেমাজি আছেন।
এই শুনেই বুক কাঁপছিল দিব্যার। তার কথায়, আমি ভেবেছিলাম, সবার ভিড়ে আমি তবে কী করব? নির্মাতারা জানিয়েছিলেন, আমি নায়িকার বন্ধুর চরিত্রে অভিনয় করব।
তবে দিব্যার দাবি, এমন চরিত্র করলে তখনকার দিনেও একটা ছাপ পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল। শুরুতে তাই নির্মাতাদের ‘না’ বলে দিয়েছিলেন দিব্যা। তবে দিব্যার মা ভালো করে মেয়েকে বোঝান। এত কিছু ধরে বসে থাকলে যে ক্যারিয়ার গড়া যাবে না!
মা দিব্যাকে বলেন, তোমার কী মাথার ওপর কেউ আছে এই পেশায়? আমি কী তোমার জন্য ছবি প্রযোজনা করতে পারব? বিষয়টি বোঝেন দিব্যা। তাতে তার মা বলেন, তাহলে ভালো করে চরিত্রটা করো, নিজের জায়গা তৈরি করো, যাতে তোমায় ভেবে এরপর চরিত্র লেখা হয়।
দিব্যা জানান, এই সিনেমার জন্য তাকে আঞ্চলিক ভাষা শিখতে হয়েছিল, রপ্ত করতে হয়েছিল বিশেষ আদবকায়দাও। তিনি বলেন, আঞ্চলিক ভাষা রপ্ত করা শক্ত কাজ ছিল। ভয়ে ভয়ে ছিলাম। প্রিমিয়ারের দিন মায়ের হাত শক্ত করে ধরে ছিলাম, কিন্তু তারপর এমন হল যে, পরে যশজিকে সবাই জিজ্ঞাসা করতেন, আমায় তিনি পাকিস্তান থেকে নিয়ে এসেছেন কি না। সিনেমায় আমার অভিনয় খুব সমাদৃত হয়েছিল।
১৯৯৪ সালে ‘ইশক মে জিনা ইশক মে মরনা’ সিনেমায় মাধ্যমে বলিউডে আত্মপ্রকাশ করেন দিব্যা। ঋতুপর্ণ ঘোষ পরিচালিত ‘দ্য লাস্ট লিয়ার’সহ (২০০৭) অনেক সিনেমায় দিব্যার উপস্থিতি দর্শকের মন ছুঁয়েছে। ওটিটির যুগেও নজরকাড়া চরিত্রেই কাজ করতে চান দিব্যা। নায়িকা বা মূল চরিত্র না হলেই কোনও চরিত্রকে ‘পার্শ্ব চরিত্র’ বলে দেওয়া মোটেই পছন্দ নয় তার।