নয় দফা দাবিতে আন্দোলন করে আসা শিক্ষার্থীরা এবার সরকারের পদত্যাগের এক দফা ঘোষণা দিয়েছেন। শনিবার (৩ আগস্ট) বিকেলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে এই ঘোষণা দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম।
ঘোষণাকালে নাহিদ ইসলাম বলেন, যেহেতু বর্তমান সরকারের নির্দেশে নির্বিচারে গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে। নারী-শিশু-ছাত্র-শিক্ষক-শ্রমিক কেউ এই গণহত্যা থেকে রেহাই পাননি। যেহেতু, সরকার এই হত্যাযজ্ঞের বিচার করার পরিবর্তে নির্বিচারে ছাত্র-জনতাকে গ্রেফতার ও নির্যাতন করছে। যেহেতু, সরকারের আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মরণঘাতী আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে হত্যাযজ্ঞ সংঘটন করেছে। যেহেতু, ছাত্র-শিক্ষক-শ্রমিক-মজুরসহ আপামর জনগণ মনে করছে এই সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ বিচার এবং তদন্ত সম্ভব নয়। সেহেতু, আমরা বর্তমান স্বৈরাচারী সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবি ঘোষণা করছি।
একই সাথে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তির নেতৃত্বে একটি গ্রহণযোগ্য ও অন্তর্ভুক্তিমূলক জাতীয় সরকার গঠনের দাবি জানায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
নাহিদ ইসলাম জানান, দাবি আদায়ে আগামীকাল রোববার (৪ আগস্ট) থেকে সরকারের বিরুদ্ধে ‘সর্বাত্মক অসহযোগ’ কর্মসূচি পালন করবেন তারা।
সরকারি চাকরিতে কোটা বহালের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন লাগাতার কর্মসূচি শুরু করে গত ১ জুলাই থেকে। ১৬ জুলাই আন্দোলন সহিংস রূপ নেয়। সারা দেশে ছড়িয়ে পড়া এই আন্দোলনে আড়াই শতাধিক মানুষ নিহত হন, যাদের বড় অংশ শিক্ষার্থী। আহত হন হাজার হাজার মানুষ। নাশকতায় ক্ষয়ক্ষতি হয় হাজার হাজার কোটি টাকার।
এই আন্দোলনে গোটা দেশ স্থবির হয়ে পড়ে। দেশে কারফিউ জারি করে সেনা মোতায়েনের মাধ্যমে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করে সরকার। তবে আন্দোলনকারীরা নয় দফা দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রাখেন।
শনিবার (৩ আগস্ট) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্দোলনকারীদের প্রতি আলোচনার আহ্বান জানিয়েছেন। তাদের জন্য গণভবনের দরজা খোলা বলেও জানিয়েছেন তিনি। তবে আন্দোলনকারীরা আলোচনার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। তারা জানিয়েছেন, এখন আর আলোচনার সুযোগ নেই।