গ্রামীণ ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদ চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ কে এম সাইফুল মজিদ জানিয়েছেন, আইন মেনেই গ্রামীণ টেলিকম ভবনের সাতটি প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ নেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, গ্রামীণ ব্যাংকের শত কোটি টাকা লোপাট করা হয়েছে। ১৯৯০ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত গ্রামীণের অর্ধশতাধিক প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ নথি সরিয়ে ফেলা হয়েছে।
শনিবার বিকেলে গ্রামীণ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। এসময় গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি পরিচালক নূর মোহাম্মদ, গ্রামীণ ব্যাংকের পরিচালক মোহাম্মদ জুবায়েদ, আইন উপদেষ্টা মাসুদ আক্তারসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে ড. এ কে এম সাইফুল মজিদ বলেন, ড. ইউনূস অনিয়ম ঢাকতেই মিথ্যাচার করেছেন। এছাড়া আগের কর্মকর্তাদের অর্থপাচারের আলামত পাওয়া গেছে।
সাইফুল মজিদ বলেন, গ্রামীণ ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ৫১/৫২টি। এসব প্রতিষ্ঠানের মালিক সরকার এবং ঋণদাতা জনগণ। ড. ইউনূসের কোনো ধরনের মালিকানা বা শেয়ার নেই।
তিনি বলেন, আইন মেনেই গ্রামীণ টেলিকম, গ্রামীণ কল্যাণ, গ্রামীণ ফান্ড, গ্রামীণ মৎস্য ফাউন্ডেশন, গ্রামীণ উদ্যোগ, গ্রামীণ সামগ্রী, গ্রামীণ শক্তি- এ সাতটি প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ও পরিচালনা পর্ষদ গঠন করেছে গ্রামীণ ব্যাংক। গ্রামীণ টেলিকম, গ্রামীণ কল্যাণ, গ্রামীণ ফান্ড- এ তিনটি কোম্পানি থেকে ড. ইউনূসের চেয়ারম্যান পদের মেয়াদ অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে।
এছাড়া, প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান বলেন, ১৯৮৩ সালে গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। গত বছর আমরা সাত মাস সময় নিতে গ্রামীণ ব্যাংকে একটা কম্প্রিহেনসিভ অডিট করেছি। ১৯৮৩ সাল থেকে ২০২৩ পর্যন্ত কম্প্রিহেনসিভ অডিটে অনেক কাগজপত্র, নথি খুঁজে পেয়েছি। সেসব নথিতে আমরা দেখেছি গ্রামীণ ব্যাংকের স্বার্থ অনেক ক্ষুণ্ন হয়েছে। গ্রামীণ ব্যাংক থেকে শত শত কোটি টাকা সরিয়ে ফেলা হয়েছে। গ্রামীণ ব্যাংকসহ গ্রামীণের ৫১ বা ৫২টা প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ বোর্ডের অনুমোদনে হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে গ্রামীণ ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূস তাঁর প্রতিষ্ঠান দখলের অভিযোগ তোলেন। দাবি করেন, আইন না মেনেই গ্রামীণ ব্যাংক ভবনে তালা দেয়া হয়েছে।
এর জবাবে শনিবার রাজধানীর মিরপুরে গ্রামীণ ব্যাংক ভবনে নতুন পরিচালনা পর্ষদ সংবাদ সম্মেলন করে। তাদের দাবি, ড. ইউনূস প্রতিষ্ঠানটির পূর্ণকালীন কর্মকর্তা ছিলেন, মালিক নন।
ড. এ কে এম সাইফুল মজিদ বলেন, ‘উনি (ড. ইউনূস) অল্প কয়েকজনকে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে এতগুলো প্রতিষ্ঠানের পরিচালক পদে দায়িত্ব দিয়েছেন। এখান থেকে অনেক টাকা মানি লন্ডারিং হয়েছে, সেটার আলামতও আমরা পেয়েছি।’
গ্রামীণ ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদের প্রধান আইন কর্মকর্তা ব্যারিস্টার মাসুদ আক্তার বলেন, মালিকানা না থাকলেও ড. ইউনূস কাছের লোকদেরই পরিচালনা পর্ষদে রেখেছেন বারবার। নথির নিরাপত্তার জন্যই গ্রামীণ ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যালয়ে তালা দেয়া হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ব্যাংকের অধীনে ৭টি প্রতিষ্ঠানের নতুন চেয়ারম্যান ও পরিচালকের নাম শিগগিরই জানানো হবে।