<< টানেলের যুগে বাংলাদেশ

চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত বহুল প্রত্যাশিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল আজ শনিবার উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি পতেঙ্গায় কর্ণফুলী নদীর পশ্চিম তীরে একটি এবং টানেল পার হয়ে বেলা ১১টায় আনোয়ারায় নদীর দক্ষিণ তীরে আরেকটি ফলক উন্মোচন করবেন। এরপর টানেলটি সোমবার (৩০ অক্টোবর) সকাল ৬টা থেকে যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হবে।

এ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামে কয়েকটি প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। প্রধানমন্ত্রী একটি বিশেষ স্মারক ডাকটিকিট, উদ্বোধনী দিনের খাম এবং প্রথম পানির নিচের সড়ক টানেলের উদ্বোধন উপলক্ষে একটি বিশেষ সিলমোহরও প্রকাশ করবেন।

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা আজ শনিবার আনোয়ারায় কোরিয়ান ইপিজেড (কেইপিজেড) মাঠে এক জনসভায় ভাষণ দেবেন। এতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীসহ বিপুলসংখ্যক মানুষ উপস্থিত হবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

টানেল উদ্বোধন উপলক্ষে জেলাজুড়ে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করায় আওয়ামী লীগের চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা শাখা এ সমাবেশের আয়োজন করছে।

বৃহস্পতিবার ঢাকায় এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রতিদিন ১৭ হাজার ২৬০টি যানবাহন টানেলটি ব্যবহার করতে পারবে, যা বছরে প্রায় ৭.৬ মিলিয়ন যানবাহনের সমান।

তিনি বলেন, টানেলটি দেশের বার্ষিক জিডিপি প্রবৃদ্ধি ০.১৬৬ শতাংশ বাড়াতে সাহায্য করবে। কাদের বলেন, ‘টানেলটি চট্টগ্রাম শহর, সমুদ্রবন্দর এবং বিমানবন্দরের দূরত্বও কমিয়ে দেবে। কারণ এটি অর্থনীতিকে আরও প্রাণবন্ত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’

মেগা প্রকল্পের পরিচালক মো. হারুনুর রশীদ চৌধুরী বলেন, টানেলটি বাংলাদেশকে বিশ্বে একটি নতুন উচ্চতায় উন্নীত করবে বলে আশা করা হচ্ছে, কারণ এটি এই অঞ্চলে নদীর তলদেশে প্রথম সড়ক সুড়ঙ্গ।

এটি চট্টগ্রামকে চীনের সাংহাই শহরের মতো ‘দুটি শহরকে একটি শহরে’ পরিণত করবে। কারণ এটি অর্থনীতিকে চাঙ্গা করে এবং শিল্পায়ন, পর্যটন এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ও সড়ক যোগাযোগ বিকাশে অপার সম্ভাবনার নতুন দ্বার উন্মোচন করে শহরের পরিধিকে সমগ্র অঞ্চলে প্রসারিত করবে।

প্রকল্পের বিবরণ অনুযায়ী, পুরো রুটের দৈর্ঘ্য হল ৯ দশমিক ৩৯ কিলোমিটার (৫ দশমিক ৮৩ মাইল), টানেলটি ৩ দশমিক ৩২ কিলোমিটার (২ দশমিক ০৬ মাইল) দৈর্ঘ্য তৈরি করে এবং এর ব্যাস ১০ দশমিক ৮০ মিটার (৩৫ দশমিক ৪ ফুট)। এটি ১০ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে এবং এর প্রায় অর্ধেক চীনের এক্সিম ব্যাংক অর্থায়ন করেছে।