যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য চেষ্টা করতে থাকা সুইডেনের উদ্দেশে এবার ‘রেড লাইন’ জারি করেছেন জোটের একমাত্র এশীয় সদস্যরাষ্ট্র তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান।
মঙ্গলবার মন্ত্রিসভার এক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে স্পষ্ট করেছি যে, সন্ত্রাসী সংগঠন এবং ইসলামভীতি যারা ছড়াচ্ছে বিরুদ্ধে লড়াই হচ্ছে আমাদের রেড লাইন। তাই যারা সন্ত্রাসবাদ সমর্থন করে কিংবা সন্ত্রাসীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়— তাদের পক্ষে তুরস্কের বন্ধুত্ব অর্জন করা সম্ভব নয়।’
সম্প্রতি স্টকহোমের কেন্দ্রীয় মসজিদে ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের ধর্মগ্রন্থ কোরআন পোড়ানোর ঘটনার নিন্দা জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘এটা ইসলামের প্রতি খুবই কাপুরুষোচিত একটি হামলা এবং এতে আমরা খুবই ক্ষুব্ধ।’
সুইডেনের বিরুদ্ধে তুরস্কের প্রাথমিক অভিযোগ মূলত মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক রাজনৈতিক দল কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি সম্পর্কে। ইরাক-ইরানের মতো তুরস্কেও এই দলের শাখা রয়েছে। তবে বিদ্রোহী এই দলটিকে কয়েক দশক আগে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে আঙ্কারা।
সুইডেনের বিরুদ্ধে তুরস্কের অভিযোগ, পিকেকে তুরস্ক শাখাকে নিয়মিত অর্থ সহায়তা দিচ্ছে সুইডেন সরাকর এবং দলটির কয়েকজন জেষ্ঠ্য নেতা সুইডেনে আত্মগোপনে থেকে তুরস্কে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছেন। এই নেতাদের ফিরিয়ে দিতে স্টকহোমের প্রতি দাবি জানিয়েছিল আঙ্কারা।
স্টকহোম যদিও এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে, কিন্তু আঙ্কারা এখনও তার অভিযোগের ব্যাপারে অনড়। ফিনল্যান্ডের বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ ছিল তুরস্কের।
এর মধ্যে গত বছর তুরস্ক, সুইডেন এবং ফিনল্যান্ডের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। সেই চুক্তিতে পিকেকেকে সহায়তা না করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল সুইডেন ও ফিনল্যান্ড। কিন্তু তুরস্কের অভিযোগ সুইডেন প্রতিশ্রুতি রক্ষা করছে না।
এ কারণে ন্যাটোর সব শর্ত পালন করা সত্ত্বেও জোটে তুরস্কের অন্তর্ভুক্তির ব্যাপারটি এখনও ঝুলে আছে। সম্প্রতি এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সাম্প্রতিক কোরআন পোড়ানোর ঘটনা।
‘সুইডেনের প্রতি আমার পরামর্শ থাকবে— বিধ্বংসী পন্থা অনুসরণ না করে চুক্তির শর্ত পালন করুন। এটা অনেক বেশি যৌক্তিক ও লাভজনক হবে আপনাদের জন্য,’ বলেন এরদোয়ান।
সূত্র : আরটি