ফুটবল খেলার শ্রেষ্ঠত্ব ও সর্বাধিক মর্যাদার মঞ্চ বিশ্বকাপ। কাতারে মরুর বুকে যার সর্বশেষ আসরটি পুরোপুরি নিজেদের করে নেয় লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনা। যা আলবিসেলেস্তাদের শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট আর মেসির ক্যারিয়ারে পূর্ণতা এনেছে। সোনালী ট্রফি উঁচিয়ে ধরার মাধ্যমে নিকট ভবিষ্যতের সকল অর্জনও একপ্রকার দখলে নিয়েছেন মেসি। সেটি তিনি আবারও প্রমাণিত করলেন লরিয়াস অ্যাওয়ার্ড জয়ের মাধ্যমে।
ক্রীড়াঙ্গনের সম্মানজনক পুরস্কার লরিয়াস অ্যাওয়ার্ড দ্বিতীয়বারের মতো আর্জেন্টাইন মহাতারকার হাতে উঠেছে। যেখানে তিনি পেছনে ফেলেছেন টেনিস কিংবদন্তি রাফায়েল নাদাল ও ক্লাব সতীর্থ কিলিয়ান এমবাপেকে। একইসঙ্গে সংস্থাটির বর্ষসেরা দলের খেতাব জিতে নিয়েছে আর্জেন্টিনা। সোমবার (৮ মার্চ) ফ্রান্সের প্যারিসে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়।
সাড়ে তিন যুগ পর আর্জেন্টিনা তৃতীয়বারের মতো বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার আক্ষেপ ঘুচে কাতার বিশ্বকাপে। সেখানে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়া অধিনায়ক মেসিরও ক্যারিয়ারের একমাত্র অপূর্ণতা মিটে যায়। এরপর বিশ্বকাপের গোল্ডেন বুট এবং ফিফার বর্ষসেরা পুরস্কারও জেতেন সর্বোচ্চ সাতবারের এই ব্যালন ডি’অর জয়ী মহাতারকা। তারই ধারাবাহিকতায় এবার এলো লরিয়াস পুরস্কার। চলতি মৌসুমে ব্যক্তিগত অর্জনের ষোলআনা পূর্ণ করতে মেসির সামনে বাকি কেবল ব্যালন ডি’অর।
ফুটবলারদের মধ্যে একমাত্র মেসি এই পুরস্কার জিতেছেন। এর আগে ২০২০ সালে পুরুষ বিভাগে লুইস হ্যামিল্টনের সঙ্গে যুগ্মভাবে সেরা হয়েছিলেন তিনি। এবার জিতে আরেকটি অনন্য অর্জন ধরা দিলো আর্জেন্টাইন মহাতারকার হাতে। তিনি ব্যক্তিগত ও দলীয় পুরস্কারজয়ী প্রথম কোনো ক্রীড়াবিদও।
লরিয়াস অ্যাওয়ার্ড অর্জনে আপ্লুত মেসি প্যারিসিয়ান ও আয়োজকদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন, ‘এটা বিশেষ এক সম্মান। বিশেষ করে এই বছর লরিয়াস ওয়ার্ল্ড স্পোর্টস অ্যাওয়ার্ড প্যারিসে হওয়ায়। যারা ২০২১ সালে এখানে আসার পর আমাদের সাদরে গ্রহণ করেছে।’
নিজের এই অর্জনের কৃতিত্ব সতীর্থদের দিয়েছেন মেসি, ‘আমি সব সতীর্থকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। শুধু জাতীয় দলের নয়, পিএসজির সতীর্থদেরও। এর কিছুই আমি একা অর্জন করতে পারতাম না। এদের সঙ্গে সব কিছু ভাগ করে নিতে পেরে আমি কৃতজ্ঞ।’
ক্রীড়াঙ্গনের সম্মানজনক এই পুরস্কারের নারী বিভাগের বর্ষসেরা হয়েছেন জ্যামাইকান স্প্রিন্টার শেলি-অ্যান ফ্রেজার-প্রাইস।
ক্রীড়াঙ্গনের ‘অস্কার’খ্যাত লরিয়াস মেসিকে এবার রেকর্ড ৭ম বারের মতো মনোনয়ন দেয়। খেলাধুলায় ব্যক্তিগত ও দলীয় অবদানের ভিত্তিতে মোট ছয়টি ক্যাটাগরিতে দেওয়া হয় এই পুরস্কার। ব্যক্তিগতভাবে এর দৌড়ে মেসি, নাদাল ও এমবাপে ছাড়াও ছিলেন মোটর রেসিং কিংবদন্তি ম্যাক্স ভারস্ট্যাপেন, অ্যাথলেটিকসে মোন্ডো ডুপলেন্টিস ও বাস্কেটবলের স্টিফেন কারি। এছাড়া দলীয়ভাবে পুরস্কৃত আর্জেন্টিনার সঙ্গে লরিয়াসে লড়েছে চ্যাম্পিয়নস লিগের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন রিয়াল মাদ্রিদ, ইংল্যান্ড নারী ফুটবল দল, ফ্রান্স রাগবি দল, ন্যাশনাল বাস্কেটবল অ্যাসোসিয়েশনের গোল্ডেন স্টেট ওয়ারিয়র্স, ফর্মুলা ওয়ানের রেড বুল রেসিং।