মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অসন্তোষ উপেক্ষা করে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতে একটি সামরিক ঘাঁটির নির্মাণ কাজ আবারও শুরু করেছে চীন। ওয়াশিংটনের তেল-সমৃদ্ধ মিত্র আমিরাত এক বছর আগে এই প্রকল্প স্থগিতের ঘোষণা দেওয়ার পর গত ডিসেম্বরে পুনরায় এর নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দাদের অত্যন্ত গোপনীয় এক নথির বরাত দিয়ে দেশটির দৈনিক ওয়াশিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। ওয়াশিংটন পোস্টের মতে, ফাঁস হওয়া মার্কিন গোয়েন্দা নথিতে জানা যায়, সংযুক্ত আরব আমিরাতে সামরিক ঘাঁটির নির্মাণ কাজ পুনরায় শুরুর পরিকল্পনা এগিয়ে নিয়েছে চীন।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানী আবুধাবির কাছের খলিফা বন্দরে সন্দেহজনক চীনা সামরিক ঘাঁটির নির্মাণ কাজ ২০৩০ সালে মধ্যে শেষ হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ১৪১ নামের এই প্রকল্পের নির্মাণ শেষ হলে তা মধ্যপ্রাচ্য, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং আফ্রিকাজুড়ে একটি বৈশ্বিক সামরিক নেটওয়ার্ক তৈরি করবে।
মার্কিন আপত্তির কারণে ২০২১ সালে আমিরাতে চীনের এই সামরিক স্থাপনার কাজ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। প্রায় এক বছর ধরে এই নির্মাণযজ্ঞ বন্ধ ছিল। সম্প্রতি আবারও সেখানে নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে বলে ফাঁস হওয়া মার্কিন গোপন গোয়েন্দা নথি থেকে জানা গেছে।
ওয়াশিংটন পোস্ট বলছে, গত ডিসেম্বরে মার্কিন গোয়েন্দারা পুনরায় সামরিক ঘাঁটিটির নির্মাণযজ্ঞ শুরু হয়েছে বলে শনাক্ত করেছেন।
নথিতে মার্কিন গোয়েন্দারা সংযুক্ত আরব আমিরাতে নির্মাণাধীন চীনা ঘাঁটি এবং অন্যান্য স্থানে চীনা সামরিক কার্যকলাপের ওপর নজরদারি চালিয়ে যাচ্ছেন বলে উল্লেখ রয়েছে। উপসাগরীয় অঞ্চলের এই দেশটি চীনের আরও কাছাকাছি আসছে এমন উদ্বেগের মাঝে বেইজিংয়ের সামরিক ঘাঁটি নির্মাণ কাজ পুনরায় শুরুর তথ্য সামনে এলো।
নতুন এই তথ্য মার্কিন সরকারকে আরও শঙ্কিত করে তুলতে পারে বলে গোয়েন্দা নথিতে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছে। আমিরাতের কয়েকটি সংবেদনশীল সামরিক স্থানে চীনা কর্মকর্তাদের উপস্থিতি মার্কিন গোয়েন্দাদের মাঝেও বিশেষভাবে উদ্বেগ তৈরি করেছে। একই সময়ে মধ্যপ্রাচ্য এবং উপসাগরীয় অঞ্চলজুড়ে ওয়াশিংটনের মিত্ররা চীনের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করার কাজও অব্যাহত রেখেছে।
আঞ্চলিক এমন পরিবর্তনে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও সৌদি আরবের মতো অন্যান্যরাও ক্রমবর্ধমানভাবে মার্কিন পররাষ্ট্র নীতির স্বার্থের বিপরীতে কাজ করছে। এমনকি চীন ও রাশিয়ার সাথে সম্পর্ক জোরদার, ইউক্রেনকে সমর্থন দিতে অস্বীকৃতি এবং তেল উৎপাদনের লাগাম টানার মতো বিষয়গুলোর বিষয়ে মার্কিন উদ্বেগকে তেমন পাত্তাই দেওয়া হচ্ছে না।