উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সংঘাতে না জড়াতে দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে চীন। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, উত্তর কোরিয়াকে যদি সংঘাতে উস্কানি দেওয়া হয়— সেক্ষেত্রে তা গোটা পূর্ব এশিয়ার শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি হয়ে উঠবে।
বৃহস্পতিবার বেইজিংয়ে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দপ্তরে আয়োজিত নিয়মিত ব্রিফিংয়ে মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং বলেন, ‘ইচ্ছাকৃতভাবে উত্তেজনা উস্কে দেওয়া, সংঘাতের উসকানি বা হুমকি-ধামকি দেওয়ার পরিবর্তে সবার উচিত— শান্তিপূর্ণ ও গঠনমূলকভাবে কোরিয়া উপদ্বীপের দুই দেশ উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যকার যাবতীয় সমস্যার সমাধান করা।’
গত প্রায় এক বছর ধরে উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়াকে ভৌগলিকভাবে বিচ্ছিন্ন করা কোরিয়া প্রণালীতে একের পর এক বিভিন্ন পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ চালিয়ে যাচ্ছে উত্তর কোরিয়া। এসব ক্ষেপণাস্ত্রের মধ্যে কয়েকটি দক্ষিণ কোরিয়ার সমুদ্রসীমার মধ্যেও পড়েছে। উত্তর কোরিয়ার শীর্ষ নেতা কিম জং উন কয়েক মাস আগে জানিয়েছেন, দেশটির পরমাণু অস্ত্র নির্মাণ প্রকল্পের কাজও অনেকদূর এগিয়ে গেছে।
এই পরিস্থিতিতে নিরাপত্তা সংক্রান্ত চাপে পড়েছে দক্ষিণ কোরিয়া। প্রতিবেশীর সম্ভাব্য হামলা থেকে নিরাপত্তা নিশ্চিতে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা চাইতে ২৫ এপ্রিল ওয়াশিংটনে গিয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইয়ুন সুক ইয়োল।
সেখানে হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ইয়ুন সুক ইয়োল এবং তা সফলও হয়েছে। বৈঠকে একটি পরমাণু অস্ত্র চুক্তি স্বাক্ষর করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়া। সেই চুক্তি অনুসারে, দক্ষিণ কোরিয়ার সমুদ্রসীমায় পরমাণু অস্ত্র সজ্জিত সাবমেরিন মোতায়েন করবে যুক্তরাষ্ট্র এবং উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের যেকোনো পরিকল্পনায় দক্ষিণ কোরিয়াকে যুক্ত করা হবে।
বিনিময়ে বিনিময়ে দক্ষিণ কোরিয়া কোনো ধরনের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করবে না।
উত্তর কোরিয়া যদি দক্ষিণ কোরিয়ায় পরমাণু অস্ত্র দিয়ে হামলা চালায়, সেক্ষেত্রে দেশটির সর্বোচ্চ নেতা কিমকে ক্ষমতাচ্যুত করা হবে বলে হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন বাইডেন।
বাইডেন এই হুঁশিয়ারি দেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়াকে পাল্টা সতর্কবার্তা দিল চীন।