বর্তমানে যে পরিমাণ জ্বালানি শ্রীলঙ্কায় জুত রয়েছে, তাতে আর মাত্র ৫ দিন কোনোভাবে চলা যাবে। এই পরিস্থিতিতে দেশবাসীকে প্রয়োজনীয় নয়— এমন ভ্রমণ ও জ্বালানি মজুত করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির বিদ্যুৎ ও জ্বালানিমন্ত্রী কাঞ্চনা উইজেসেকারা।
বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে কাঞ্চনা উইজেসেকারা বলেন, ‘বৈদেশিক মুদ্রার সংকটের কারণে জ্বালানি কিনতে বেগ পেতে হচ্ছে আমাদের। এই মুহূর্তে যে পরিমাণ পেট্রোল ও ডিজেলের মজুত আমাদের হাতে রয়েছে, তা দিয়ে বড়জোর ২১ জুন পর্যন্ত চলা যাবে।’
‘আমরা কী পরিমাণ কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি, আশা করি তা দেশবাসী বুঝতে পারছেন। তাই তাদের কাছে আমাদের অনুরোধ, জরুরি নয়— এমন ভ্রমণ আপাতত বন্ধ রাখুন এবং জ্বালানি মজুত করা থেকে বিরত থাকুন।’
১৯৪৮ সালে যুক্তরাজ্যের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের পর ইতিহাসের সবথেকে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকট পার করছে শ্রীলঙ্কা। ভারত মহাসাগরের ছোট এই দ্বীপরাষ্ট্রটিতে বৈদেশিক মু্দ্রার রিজার্ভ না থাকায় জ্বালানি, খাবার এবং ওষুধের মত অতি জরুরি পণ্যও আমদানি করতে পারছে না দেশটির সরকার।
এর মধ্যে জ্বালানি সংকট তীব্র হয়ে উঠেছে শ্রীলঙ্কায়। ডিজেলের সরবরাহ অনিয়মিত হয়ে পড়ায় প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারছে না শ্রীলঙ্কার বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলো। ফলে গত কয়েকমাস ধরে সেখানে দিনের বেশিরভাগ সময়ই বিদ্যুৎ থাকছে না। এছাড়া পেট্রোল, ডিজেল, রান্নার গ্যাস কিনতে লোকজনকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে বিদ্যুৎ ও জ্বালানিমন্ত্রী জানান, বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক বাজার থেকে ইতোমধ্যে বাকিতে প্রায় ৭০ কোটি ২৫ লাখ ডলারের জ্বালানি তেল কিনেছে শ্রীলঙ্কা, সেই অর্থ এখনও পরিশোধ করা হয়নি।
আগের দেনা পরিশোধ না করতে পারায় এখন ধারে জ্বালানি কেনাও কঠিন হয়ে পড়ছে দেশটির জন্য।
তবে একটি আশার কথাও সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন কাঞ্চনা উইজেসেকারা। তিনি বলেছেন, ভারতের এক্সিম ব্যাংক শ্রীলঙ্কার সরকারকে জ্বালানি ক্রয় বাবদ ৫০ কোটি ডলার ঋণ দেবে বলে জানিয়েছে।
‘আমরা এখন অফিসিয়াল কনফার্মেশনের জন্য অপেক্ষা করছি। যদি সেটি মিলে যায়, সেক্ষেত্রে আগামী কয়েক সপ্তাহের জন্য ডিজেল ও পেট্রোল কিনতে পারবে সরকার।’
সূত্র: রয়টার্স