সিঙ্গাপুরে ডিজিটাল ইনোভেশন কংগ্রেসে ‘স্মার্ট বাংলাদেশের’ কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরেছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
তিনি বলেছেন, ২০৩১ সালের মধ্যে এসডিজি ও উচ্চ মধ্যম আয় নিশ্চিত করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ২০৪১ সাল নাগাদ জ্ঞানভিত্তিক, উচ্চ অর্থনীতির উন্নত, সমৃদ্ধ দেশে রূপান্তরের লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। এতে মাথাপিছু আয় বেড়ে দাঁড়াবে ১২ হাজার ৫০০ ডলার। গড়ে উঠবে স্মার্ট বাংলাদেশ। দেশের কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবহন, যোগাযোগের ক্ষেত্রে দ্রুত পরিবর্তন আসবে।
শুক্রবার (২০ মে) সিঙ্গাপুর ম্যারিনা বে স্যান্ড হোটেলে চলমান তিন দিনের ‘হুয়াওয়ে এশিয়া প্যাসিফিক ডিজিটাল ইনোভেশন কংগ্রেসে ২০২২’ এর দ্বিতীয় দিনের প্রথম টেকনিক্যাল সেশনে ২০৪১ সালের জ্ঞানভিত্তিক, উদ্ভাবনী, উন্নত অর্থনীতির স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের কর্মপরিকল্পনা ও ডিজিটাল বাংলাদেশের সফলতাও
তুলে ধরেন জুনাইদ আহমেদ পলক।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ও মতাদর্শ বাস্তবায়নে অর্থনৈতিকভাবে উন্নত ও শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠায় কাজ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। জয়ের তত্ত্বাবধানে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়নের ফলে মাত্র ১৩ বছরে প্রতিটি ইউনিয়নের ব্রডব্যান্ড কানেক্টিভিটি পৌঁছে গেছে। ৯০ শতাংশ সরকারি সেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয়েছে।
বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশের রূপান্তরিত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ডিজিটাল দুনিয়ায় বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব অক্ষুণ্ন রাখতে এরই মধ্যে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মধ্যে ডিজিটাল সেতুবন্ধন রচনায় একটি সুরক্ষিত ক্লাউড অবকাঠামো তৈরি করেছে আইসিটি বিভাগ। এই অবকাঠামোতে ইতোমধ্যেই ৩০টির বেশি বিভাগ, ৫০টির বেশি প্রকল্প অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। ৫০ শতাংশ দক্ষতার উন্নয়ন ঘটেছে। আইটিইউ’র গ্লোবাল সাইবার সিকিউরিটি সূচকে ২৫ ধাপ এগিয়েছে বাংলাদেশ।
পলক আরো বলেন, বাংলাদেশের আইটি ও আইটিএস খাতে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ক্রমেই বাড়ছে। ২০১০ সাল থেকে প্রতি বছর গড়ে ১০ শতাংশ করে প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এর মধ্যে ই-কমার্স খাতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৬২৪ শতাংশ। এই ধারাবাহিকতায় আগামী ২০২৫ সালের মধ্যে স্থানীয় ই-কমার্স খাতে প্রবৃদ্ধি হবে ৮০ শতাংশ। দেশের ৭২ শতাংশ লেনদেন মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল মাধ্যমে হওয়ায় ডিজিটাল অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫০০ শতাংশ। ডিজিটাল ডিভাইস বাজারে প্রবৃদ্ধি হচ্ছে গড়ে ২৯ শতাংশ হারে। দেশের ২৫০০টির বেশি স্টার্টআপ দেশে একটি উদ্যোক্তা সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা করেছে। এর মধ্যে ৭০ শতাংশই প্রযুক্তি নির্ভর উদ্যোক্তা।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ রূপকল্প বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সবাইকে সঙ্গেই নিয়েই বাংলাদেশ একটি উন্নত দেশে রূপান্তরিত হবে। স্বাভাবিক গতিতেই যেন এই রূপান্তর সম্ভব হয় সেজন্য সরকার বেশকিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। এর মধ্যে তরুণদের উদ্ভাবনকে সবচেয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। তাদের নিয়েই ২০৪১ সালে অর্থনীতি শক্তিতে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে ২৩তম হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে। জিডিপিতে আইসিটির অবদান বেড়ে দাঁড়াবে ২০ শতাংশ।
তিনি আরো বলেন, অর্থনৈতিক উন্নয়নে দেশের উদ্ভাবক এবং উদ্যোক্তারাই হবে গেম চেঞ্জার। এজন্য আইডিইএ প্রকল্পের মাধ্যমে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে শিক্ষাবিদ, অ্যাক্সেলেরেটস ও ইনকিউবেটরসদের মধ্যে একটি ইকোসিস্টেম তিরি করছে সরকার।
সম্মেলনে বিভিন্ন দেশের মন্ত্রী, সরকারি ও বেসরকারি নীতিনির্ধারণী ব্যক্তিরা অংশগ্রহণ করেন। আইসিটি বিভাগের জনসংযোগ কর্মকর্তা শহিদুল আলম মজুমদার স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।