বিএনপি বিভাজনের রাজনীতি করে না। সব সময় ঐক্যের রাজনীতি করে। দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে হলে সবার মধ্যে একটা ইস্পাত কঠিন ঐক্যের প্রয়োজন। এখানে একেকজনের ধর্ম আলাদা হতে পারে, চিন্তাভাবনা আলাদা হতে পারে। কিন্তু একটা জায়গায় এসে আমরা সবাই বাংলাদেশি।
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর বাসাবোর ধর্মরাজিক বৌদ্ধ মহাবিহারের অধ্যক্ষ শুদ্ধানন্দ মহাথেরোর প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানিয়ে এসব কথা বলেন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শুদ্ধানন্দ মহাথেরো (৮৭) ২০২০ সালের ৩ মার্চ ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। করোনা মহামারির কারণে তার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার অনুষ্ঠান হয়নি। দুই বছর পর ধর্মরাজিক বৌদ্ধবিহারে তিন দিনব্যাপী ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান হয়। মির্জা ফখরুল ইসলামের নেতৃত্বে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল গ্লাসের ভেতরে রক্ষিত শুদ্ধানন্দ মহাথেরোকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
পরে মির্জা ফখরুল ইসলাম ধর্মরাজিক বৌদ্ধবিহারের মূল প্যান্ডেলে গিয়ে বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, শুদ্ধানন্দ মহাথেরো যেন পরলোকে শান্তিতে থাকেন, এই প্রার্থনা আমরা করি। আমরা প্রার্থনা করব, সৃষ্টিকর্তা যেন আমাদের এই পৃথিবীকে শান্তিময় করে দেন, এই বাংলাদেশকে তিনি যেন শান্তিময় করে দেন। আমরা যেন বাংলাদেশ সত্যিকার অর্থেই একটি কল্যাণমূলক রাষ্ট্র, একটি ভ্রাতৃত্বমূলক ও সৌহার্দ্যমূলক রাষ্ট্রে আনন্দের সঙ্গে বাস করতে পারি, প্রেমের সঙ্গে, ভালোবাসার সঙ্গে, এই হোক আজকে আমাদের প্রার্থনা।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশ আমার দেশ। আমরা মনে করি যে এখানে যারা বাস করেন, সব মানুষই বাংলাদেশি। এখানে ধর্ম আলাদা, একেকজনের একেকটা ধর্ম হতে পারে, চিন্তাভাবনা আলাদা হতে পারে। কিন্তু একটা জায়গায় এসে আমরা সবাই বাংলাদেশি। এই তত্ত্ব আমাদের দিয়েছেন তার দর্শনের মাধ্যমে, তিনি হচ্ছেন আমাদের শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান।
বিএনপির প্রতিনিধিদলে আরও ছিলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, কেন্দ্রীয় নেতা গৌতম চক্রবর্তী, সুশীল বড়ুয়া, মহানগর বিএনপির হাবিবুর রশীদ হাবিব, ইউনুস মৃধা প্রমুখ। বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘের সভাপতি ও শুদ্ধানন্দ মহাথেরো জাতীয় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি বুদ্ধপ্রিয় মহাথেরো বিএনপির প্রতিনিধিদলকে শুভেচ্ছা জানান।
শুদ্ধানন্দ মহাথেরো ১৯৩৩ সালের ১৫ জানুয়ারি চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার উত্তর পাদুয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। সমাজ সেবায় অবদানের জন্য ২০১২ সালে তাকে একুশে পদক দেওয়া হয়।
এদিকে নোয়াখালী জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন খানকে গ্রেফতারের ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। একইসঙ্গে অবিলম্বে মামলা প্রত্যাহার করে তার নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার এক প্রেস বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, বুধবার রাত ৩টায় নুরুলকে গ্রেফতার করা হয়। প্রতিহিংসাপরায়ণ বর্তমান সরকার বিএনপিসহ দেশের বিরোধী দলগুলোর নেতাকর্মীদের ওপর জুলুম-নির্যাতনের স্টীম রোলার চালিয়ে নিজেদের একচ্ছত্র আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত করতে চায়। যে কারনে সীমাহীন হিংস্ররুপ ধারণ করেছে। আর এই উদ্দেশ্য পূরণে গুম, খুন, অপহরণ ছাড়াও বিরোধী নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের মাধ্যমে কারান্তরীণ করতে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান পৃথক বিবৃতিতে নুরুল আমিন খানকে গ্রেফতারের ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে তার মুক্তির দাবি জানিয়েছেন।