২৮ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হয়ে গেল বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন। এফডিসিতে অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনে অনেক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। কয়েক দশকের ইতিহাসে যা বিরল। অনেকেই এবারের নির্বাচনকে চলচ্চিত্রের শিল্পের জন্য একটি কালো অধ্যায় হিসেবে দেখছেন।
২৮ জানুয়ারিকে দাবি করছেন সিনেমার কালো দিন হিসেবে। কারণ নির্বাচনের দিন সাংবাদিক ও শিল্পীরা ছাড়া চলচ্চিত্রের বাকি ১৭টি সংগঠনের কাউকে এফডিসিতে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। চলচ্চিত্রকর্মীদের দাবি, নির্দিষ্ট একটি প্যানেলের সমর্থনে নীল নকশা বাস্তবায়ন করতেই এমনটি করেছে নির্বাচন কমিশনার পীরজাদা হারুন ও এফডিসির এমডি নুজহাত ইয়াসমিন। সেই প্রতিবাদে আন্দোলনে নেমেছ চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট সবগুলো সংগঠন। গতকাল ৩০ জানুয়ারি এফডিসিতে এমডির অপসারণ চেয়ে তার কুশপুতুলে আগুন দিয়েছে সংগঠনগুলোর নেতা-কর্মী ও সদস্যরা।
১৭ সংগঠনের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, ব্যবস্থাপনা পরিচালকের স্বেচ্ছাচারিতা জন্যই ১৭ সংগঠনের সদস্যরা শিল্পী সমিতির নির্বাচনের ঢুকতে পারেনি। তাই তারা এই এমডির অপসারণ চান। সেইসঙ্গে এফডিসির নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে অভিনেতা আলমগীরকে দাবি করেন তারা। চলচ্চিত্রকে মনে প্রাণে ভালোবাসেন এমন ব্যক্তি হিসেবে আলমগীরকে এমডি পদে দেখতে চান সবাই।
বিষয়টি নিয়ে কিংবদন্তি অভিনেতা আলমগীর গণমাধ্যমে বলেন, ‘আমি চলচ্চিত্রের মানুষ। চলচ্চিত্রকে ভালোবাসি। এর ক্রান্তিলগ্নে পাশে থাকতে চেষ্টা করেছি সবসময়। আমার কোনো পদের দিকে বিশেষ কোনো আগ্র নেই। চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্টরা চাইলে আমি তাদের চাওয়াকে অবশ্যই সম্মান জানাব।’
অভিনেতা আলমগীর এফডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক হলে এ শিল্পে জন্য বিপ্লব ঘটবে বলে দাবি করেন প্রযোজক সমিতির সাবেক সভাপতি খোরশেদ আলম খসরু। তিনি বলেন, ‘আমাদের অভিভাবক যে ক’জন আছেন তাদের মধ্যে সিনেমার ক্রান্তি লগ্নে সবসময় পাশে পাই ফারুক সাহেব, সোহেল রানা সাহেব, আলমগীর সাহেব ও কাঞ্চন সাহেবকে। ফারুক সাহেব ও সোহেল রানা সাহেব অসুস্থ। কাঞ্চন সাহেব শিল্পী সমিতির দায়িত্ব নিয়েছেন। তাই আলমগীর সাহেবকে এফডিসির এমডি হিসেবে চাই। এনারা দায়িত্ব নিলে চলচ্চিত্রের এই বেহাল দশা বদলে যাবে বলে আমাদের বিশ্বাস।
কয়েক দিন ধরে এফডিসিতে যেটা ঘটে চলেছে সেটা সম্পূর্ণ অনুচিত। এককথায় বাড়াবাড়ি ছাড়া কিছুই নয়। আলমগীর ভাই আপাদমস্তক চলচ্চিত্রের মানুষ। তিনি চলচ্চিত্রের খুঁটিনাটি সব কিছুই জানেন। আমাদের কোথায় কী ঘাটতি সেটাও তার নখদর্পণে। এমন একজন মানুষ এফডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক হলে তো আমাদের সবার জন্য মঙ্গল।’
পরিচালক সমিতির বর্তমান সভাপতি সোহানুর রহমান সোহান বলেন, ‘আলমগীর ভাইকে ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে চাওয়াটা আমাদের এখন আর মৌখিক দাবি নয়। আমরা ১৮ সংগঠনের পক্ষ থেকে শিগগির তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করব। লিখিত আকারেও দাবি জানাব। বর্তমান চলচ্চিত্রে আলমগীর ভাইয়ের মতো পরিষ্কার মন-মানসিকতার মানুষ কম আছেন।
সবার বিপদ-আপদে তিনি হাজির হন। শুধু তাই নয়, সাংগঠনিকভাবে তার অভিজ্ঞতা দারুণ। তিনি এফডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক হলে আমাদের জন্য অনেক বড় পাওয়া হবে। তার মাধ্যমেই শুধু এফডিসির বর্তমান ভঙ্গুর অবস্থার পরিবর্তন আসতে পারে।’
পরিচালক দেলোয়ার জাহান ঝন্টু, শাহ আলম কিরণ, বদিউল আলম খোকন, পরিচালক সমিতির বর্তমান মহাসচিব শাহীন সুমনও এসময় উপস্থিত ছিলেন। তাদেরও দাবি কোনো আমলা নয়, এফডিসির এমডি হওয়া উচিত চলচ্চিত্রেরই কাউকে।