দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে তৃতীয় দফা শৈত্যপ্রবাহ চলছে। প্রায় সারা দেশেই শীতের প্রকোপ চললেও উত্তর, মধ্য এবং পূর্বাঞ্চলে পরিস্থিতি বেশি খারাপ। কনকনে শীতের সঙ্গে আছে হিমালয়ের দিক থেকে আসা শীতল সমীরণ। সেই সঙ্গে ব্যাপক হারে নেমে গেছে বাতাসের আর্দ্রতা। ফলে সবমিলে মধ্য মাঘে হাড় কাঁপানো শীত পড়েছে।
মাঘের কনকনে ঠাণ্ডায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন শ্রমজীবী ও কর্মজীবীরা। বিশেষ করে কৃষিখেতে শ্রমিক ও যানবাহন চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করা মানুষগুলো পড়েছে বিপাকে। এছাড়া কুয়াশা ও ঠান্ডা বাতাসের কারণে বোরো বীজতলা ও আলুখেত নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে কৃষক। ছত্রাকের আক্রমণ থেকে আলুখেত রক্ষা করতে ঘন ঘন ছত্রাকনাশক স্প্রে করতে হচ্ছে কৃষকদের।
তীব্র ঠান্ডা উপেক্ষা করে কৃষকরা করছেন বোরো রোপণের কাজ। বাড়িতে বাড়িতে শীত নিবারণের জন্য আগুন পোহাচ্ছে গ্রামের মানুষ। ঠান্ডাজনিত রোগবালাই ক্রমেই বেড়ে চলছে। ফলে হাসপাতালগুলোতে ঠান্ডাজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।
আবহাওয়াবিদদের মতে, সাধারণত তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে নামলে এবং ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে তাকে মৃদ্যু শৈত্যপ্রবাহ বলে। এছাড়া ৬ থেকে ৮ ডিগ্রিতে নেমে এলে তা মাঝারি আকারের এবং এর নিচে নামলে তীব্র শৈত্যপ্রবাহে পরিণত হয়। শুক্রবার দেশে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় কুড়িগ্রামে, ৬ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। হিমালয়সংলগ্ন বাংলাদেশের জেলা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ার তাপমাত্রা ৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়া বিভাগ (বিএমডি) দেশের ৪২ স্টেশনে তাপমাত্রা রেকর্ড করে। এগুলোর অধিকাংশ স্থানেই সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার পার্থক্য কম। সাধারণত এই পার্থক্য ১০ ডিগ্রি বা এর নিচে নেমে হালে হাড় কাঁপানো শীত অনুভূত হয়।
আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল পর্যন্ত বিস্তৃত। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ অবস্থান করছে দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে। এর বর্ধিতাংশ উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত। এমন পরিস্থিতি হলে মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের নদী অববাহিকায় মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা এবং এছাড়া দেশের অন্যত্র হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে।
গোপালগঞ্জ, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, মৌলভীবাজার, যশোর ও কুষ্টিয়া জেলাসহ রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি মাত্রার শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এ পরিস্থিতি এখন পর্যন্ত আরও তিন দিন থাকার কথা বলছে সংস্থাটি। এ সময় শৈত্যপ্রবাহ আরও নতুন নতুন এলাকায় বিস্তার লাভ করতে পারে।