মহাবিশ্বকে আলোকিত করা প্রথম নক্ষত্রপুঞ্জ আর ছায়াপথের খোঁজে বিশ্বের এ যাবৎকালের সবচেয়ে বড় মহাকাশ বিষয়ক টেলিস্কোপ জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ (জেডব্লিউএসটি) মহাকাশের পথে ঐতিহাসিক যাত্রা শুরু করেছে। শনিবার দক্ষিণ আমেরিকার ফ্রেঞ্চ গিনিতে অবস্থিত ‘ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির (ইএসএ)’ কৌরো মহাকাশবন্দর থেকে জেডব্লিউএসটির এই যাত্রা শুরু হয়েছে।
বিবিসি বলছে, প্রায় ৩০ বছর ধরে নকশা করার পর জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ তৈরিতে ব্যয় হয়েছে ১০০০ কোটি ডলার; যা প্রাথমিকভাবে নির্ধারিত বাজেটের প্রায় ১০ গুণ বেশি। একুশ শতকের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈজ্ঞানিক প্রকল্পগুলোর মধ্যে অন্যতম বৃহৎ হিসেবে মনে করা হয় জেডব্লিউএসটি প্রকল্পকে।
চাঁদে অবতরণকারী মনুষ্যবাহী মহাকাশযান অ্যাপোলোর এক স্থপতির নাম অনুযায়ী জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের নামকরণ করা হয়েছে; যা হাবল টেলিস্কোপের উত্তরসূরী। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং কানাডার মহাকাশ গবেষণা সংস্থার প্রকৌশলীরা আড়াই যুগের প্রচেষ্টায় শতগুণ বেশি শক্তিশালী নতুন এই পর্যবেক্ষক টেলিস্কোপ তৈরি করেছেন।
মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার ব্যবস্থাপক বিল নেলসন বলেছেন, ‘জেমস ওয়েব বিস্ময়কর এক মিশন। আমরা যখন বড় স্বপ্ন দেখি তখন সেটি থেকে কতটা অর্জন করতে পারি তার উজ্জ্বল উদাহরণ এটি। আমরা সব সময় জানতাম যে, প্রকল্পটি ঝুঁকিপূর্ণ হবে। কিন্তু বড় কিছু অর্জন করতে গেলে বড় কিছু ঝুঁকি নিতেই হবে।’
ওয়েবের আরেকটি বড় লক্ষ্য হবে দূরবর্তী গ্রহের বায়ুমণ্ডল অনুসন্ধান করা। এটি গবেষকদের কোনও গ্রহ বাসযোগ্য কি-না তা নির্ধারণ করতে সাহায্য করবে। এই মিশনের আন্তঃবিভাগীয় বিজ্ঞানী ও জ্যোতির্বিজ্ঞানী হেইডি হ্যামেল বলেছেন, ‘আমরা জ্যোতির্পদার্থবিজ্ঞানের সম্পূর্ণ নতুন এক ব্যবস্থায় প্রবেশ করতে যাচ্ছি, এক নতুন সীমান্ত; এবং এটাই জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ সম্পর্কে আমাদের অনেকের রোমাঞ্চকর অনুভূতি তৈরি করেছে।’