ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য তামিলনাড়ুতে দেশটির প্রতিরক্ষাপ্রধান ও সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল বিপিন রাওয়াতসহ ১৪ সামরিক কর্মকর্তাকে বহনকারী হেলিকপ্টার বিধ্বস্তে অন্তত ১৩ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এ ঘটনায় মাত্র একজন জীবিত আছেন; যার শরীরের ৯০ শতাংশ পুড়ে গেছে এবং তার পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
বুধবার বেলা ১২ টা ২০ মিনিটে তামিলনাড়ুর কুন্নুরের জঙ্গলে দেশটির প্রতিরক্ষাপ্রধানসহ ১৪ জনকে বহনকারী এই হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়। এতে প্রাথমিকভাবে ৭ জনের প্রাণহানির তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছিল।
দেশটির বার্তাসংস্থা এএনআই ভারতের প্রতিরক্ষা সূত্রের বরাত দিয়ে বলেছে, তামিলনাড়ুতে দুর্ঘটনার শিকার সামরিক হেলিকপ্টারের ১৪ আরোহীর মধ্যে ১৩ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছে। ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে মৃতদের পরিচয় নিশ্চিত করা হবে।
এনডিটিভি বলছে, দুর্ঘটনার কবলে পড়া রাশিয়ার তৈরি এমআই-১৭ভি৫ হেলিকপ্টারটিতে পাঁচজন ক্রু ও ৯ জন আরোহী ছিলেন। এই আরোহীদের মধ্যে ভারতের তিন বাহিনীর সর্বাধিনায়ক ও সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল বিপিন রাওয়াত এবং তার স্ত্রী মধুলিকাও ছিলেন। অন্য যাত্রীদের মধ্যে দেশটির প্রতিরক্ষা সহকারী এবং নিরাপত্তা কর্মকর্তারা ছিলেন।
তামিলনাড়ুর নীলগিরি জেলা কালেক্টরের তথ্য অনুযায়ী, হেলিকপ্টার বিধ্বস্তে ১৩ জন মারা গেছেন। এছাড়া শরীরের ৯০ শতাংশ পুড়ে যাওয়া একজন জীবিত আছেন। তার চিকিৎসা চলছে।
তবে জেনারেল রাওয়াতের ব্যাপারে এখনও পরিষ্কার কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে ভারতের প্রথম প্রতিরক্ষা প্রধানের দায়িত্ব নেন সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল বিপিন রাওয়াত। দেশটির তিন বাহিনী—সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর সমন্বয়ের জন্য তাকে এই পদে বসানো হয়।
দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে এই দুর্ঘটনার তথ্য জানিয়েছেন। আগামীকাল দেশটির সংসদে এ ব্যাপারে কথা বলবেন রাজনাথ।
ভারতীয় বিমান বাহিনীর এমআই-১৭ ফাইভ মডেলের এই হেলিকপ্টারটি তালিমানাড়ুর সুলুর এলাকায় অবস্থিত সামরিক ঘাঁটি থেকে উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পরই নীলগিরিতে বিধ্বস্ত হয়। রাশিয়ার তৈরি এই হেলিকপ্টার বিধ্বস্তের খবর ১২টা ২০ মিনিটের দিকে জেলা প্রশাসনকে জানান স্থানীয়রা। সেখানে পৌঁছে দেশটির আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরা উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করেন।
দেশটির সাবেক সেনাপ্রধান জেজে সিং এনডিটিভিকে বলেছেন, দুর্ঘটনাস্থল থেকে যেসব মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে, পুড়ে অঙ্গার হয়ে যাওয়ায় তাদের পরিচয় শনাক্ত করা কঠিন হয়ে পড়েছে। যে একজনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে, তার অবস্থাও অত্যন্ত আশঙ্কাজনক।
সামরিক এই হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখতে ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু হয়েছে বলে দেশটির বিমান বাহিনীর এক টুইট বার্তায় জানানো হয়েছে।