পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার দেবনগড় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে জয়লাভের পর নিজেদের আত্মশুদ্ধির জন্য তাবলীগ জামাতে গেলেন নবনির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যরা।
শুক্রবার (১৯ নভেম্বর) দেবনগড় ইউনিয়ন পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান ছলেমান আলীর নেতৃত্বে সাধারণ ওয়ার্ডের নির্বাচিত সদস্য ও সংরক্ষিত নারী সদস্যদের স্বামীদের নিয়ে ১৩ সদস্যের একটি দল তাবলীগ জামাতে যায়।
জানা গেছে, চেয়ারম্যান ও সদস্যরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে সবাইকে নামাজের জন্য আহ্বান জানাচ্ছেন। দোকানপাট কিংবা বাজারে স্থানীয় শিক্ষার্থী ও যুবকদের আড্ডা দেওয়া থেকে বিরত রাখতে মসজিদে নামাজের জন্য আহ্বান জানাচ্ছেন। পাশাপাশি বাড়িতে পড়াশোনার জন্য বলছেন। বিষয়টি স্থানীয়দের রীতিমতো তাক লাগিয়ে দিয়েছে। এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছে স্থানীয় সচেতন মহল।
গত ১১ নভেম্বর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ছলেমান আলী দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে। ঘোড়া প্রতীক নিয়ে প্রথমবারের মতো চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
তাবলীগ জামাতের নিয়ম অনুযায়ী ১৩ সদস্য বিশিষ্ট ওই দলের (জামাতের) আমীর হিসেবে নেতৃত্ব দিচ্ছেন চেয়ারম্যান নিজেই। সাত দিনে তারা দুই মসজিদে অবস্থান করবেন।
দেবনগড় ইউনিয়নের পাথরঘাটা এলাকার বাসিন্দা শাহিন আলম বলেন, জীবনে অনেক চেয়ারম্যান মেম্বার দেখেছি। কিন্তু এবার যারা নির্বাচিত হয়েছেন তাদের মতো দেখিনি। নির্বাচনে জয় লাভের পর তারা আত্মশুদ্ধির জন্য তাবলীগ জামাতে আসছেন আমাদের মসজিদে। নামাজের জন্য ডাকছেন আমাদের। একজন নাগরিক হয়ে নিজেকে গর্বিত মনে হচ্ছে।
ওই এলাকার আরেক বাসিন্দা জহিরুল ইসলাম বলেন, আমাদের ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ ইউপি সদস্যরা আমাদের এলাকায় মসদিদে জামাতে এসেছে। দেখে অনেক ভালো লেগেছে। জনপ্রতিনিধিরা যদি সৎ হয় তাহলে একজন নাগরিকও তাদের সেবা থেকে বঞ্চিত হবে না।
৭ নং দেবনগড় ইউনিয়ন পরিষদের নর্বনির্বাচিত চেয়ারম্যান ছলেমান আলী বলেন, ১১ নভেম্বর দেবনগড় ইউনিয়নবাসী আমাকে বিপুল ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত করেছে। আগে থেকেই আমরা নামাজ পড়তাম। নিজেদের আত্মশুদ্ধির জন্য জামাতে এসেছি। আমাদের ভালোই লাগছে।
৪ নং ওয়ার্ডের নবনির্বাচিত ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম বলেন, আমি প্রথম ইউপি সদস্য নির্বাচিত হয়েছি। আমাদের চেয়ারম্যান আমাদের সবাইকে নিয়ে তাবলীগ জামাতে নিয়ে এসেছে। এতে আমরা অনেক আনন্দিত। তিনি আমাদের অনেক বিষয়ে শিক্ষা দিচ্ছেন। আমরা সবাই প্রতিজ্ঞা করছি, আমাদের ইউনিয়নের মানুষের সেবা করার জন্য সবসময় প্রস্তুত থাকব। কোনো মানুষ যেন তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত না হয় সেদিকে খেয়াল রাখব।