বাংলালিংকের বিরুদ্ধে কপিরাইট আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে মামলা করেছেন শীর্ষ সংগীত তারকা জেমস। বুধবার (১০ নভেম্বর) মহানগর দায়রা জজ আদালত মামলাটি গ্রহণ করেন।
এ মামলায় সমন জারি করে বাংলালিংক কর্তৃপক্ষকে হাজির হতে আদেশ দিয়েছেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশের আদালত।
সংশ্লিষ্ট আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আদালতে গিয়ে মামলার আবেদন করেন রকস্টার জেমস।
তাপস কুমার পাল বলেন, ‘জেমস বাংলাদেশের একজন জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী। তার অসংখ্য জনপ্রিয় গান আছে। তার কাছ থেকে কোনো ধরনের অনুমতি না নিয়েই জেমসের গান বাংলালিংক তাদের ওয়েলকাম টিউন, বিজ্ঞাপনসহ বিভিন্ন মাধ্যমে ব্যবহার করে আসছে। বাংলালিংকের এই কর্মকাণ্ড কপিরাইট আইন ভঙ্গের সামিল। এ কারণে তিনি মামলা করছেন।’
তুমুল জনপ্রিয় গায়ক জেমস এদেশের ব্যান্ড মিউজিকের উজ্জ্বল নক্ষত্র। আশির দশকের শুরুতে চট্টগ্রামে সঙ্গীত জীবন শুরু তার। ১৯৮৬ সালে ঢাকায় চলে আসেন। সঙ্গে ব্যান্ড ‘ফিলিংস’। প্রকাশ করে প্রথম অ্যালবাম ‘স্টেশন রোড’। প্রথম অ্যালবাম দিয়ে সেই সময় স্পটলাইটে চলে আসে ব্যান্ডটি।
১৯৮৭ সালে প্রকাশ পায় ‘অনন্যা’। জেমসের প্রথম একক অ্যালবাম। আসিফ ইকবালের লেখা অ্যালবামের প্রতিটি গানে যেন নতুন এক জেমসের জন্ম হয়। আশির দশকের শেষে শুরু হয় তারকা জেমসের যাত্রা। ১৯৯৩ সালে প্রকাশ হয় ‘জেল থেকে বলছি’। প্রতিটি অ্যালবাম জেমসকে একটু একটু করে নিয়ে যায় শীর্ষ অবস্থানে। ‘ফ্লপ’ শব্দটি নেই জেমসের ক্যারিয়ারে।
‘ফিলিংস’ থেকে জেমস আরও তিনটি অ্যালবাম প্রকাশ করেন। ‘নগর বাউল’, ‘লেইস ফিতা লেইস’ ও ‘কালেকশন অব ফিলিংস’- প্রতিটি অ্যালবামই সুপার হিট। এরমধ্যে প্রকাশ পায় জেমসের আরও তিনটি একক অ্যালবাম। সেগুলো হলো- ‘পালাবো কোথায়’, ‘দুঃখিনী দুঃখ করো না’ ও ‘ঠিক আছে বন্ধু’।
ব্যান্ড সঙ্গীত নিয়ে বিতর্কিত ধারণা কমতে থাকে নব্বই দশকে। ‘দুঃখিনী দুঃখ করো না’র টাইটেল গানটি জেমসের একক জনপ্রিয়তাকে শীর্ষে নিয়ে যায়। ‘কালেকশন অব ফিলিংস’-এর পর জেমস গড়েন নতুন ব্যান্ড। নাম ‘নগর বাউল’। কিন্তু ‘ফিলিংস’ ছেড়ে দেওয়ার পর জেমস মনযোগী হন একক ক্যারিয়ারে। ‘নগর বাউল’ থেকে প্রকাশ পায় মাত্র দুটি অ্যালবাম- ‘দুষ্টু ছেলের দল’ ও ‘বিজলি’।
বাংলাদেশ ছাড়িয়ে বলিউডেও জনপ্রিয় জেমস। ২০০৫ সালে ‘গ্যাংস্টার’ সিনেমার ‘ভিগি ভিগি’ দিয়ে বলিউড ক্যারিয়ার শুরু। এরপর ২০০৬ সালে ‘চল চলে’, ২০০৭ সালে ‘আলবিদা’ ও ২০১৩ সালে প্রকাশ প্রায় ‘বেবাসি’ গানগুলো।
ব্যক্তিজীবনকে সামনে আনতে চান না তিনি। তাই তার সম্পর্কে ভক্তদের জানাশোনাও কম। জেমসের স্ত্রী বেনজির সাজ্জাদ। তাদের তিন সন্তানের মধ্যে বড় ছেলে দানেশ। দুই মেয়ে জান্নাত ও জাহান।
সাম্প্রতিক সময়ে জেমসের নতুন গান প্রকাশের সংখ্যা খুবই কম। তবে পুরনো গানেই ভক্তদের মনে এখনও সমান দোলা দেন তিনি। জেমসের গানের সুরক্ষায় সমর্থন জানাচ্ছেন ভক্তরা।