চার দশকের বিভিন্ন সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা, কূটনীতিক, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন এবং জাতিসংঘে ভাষণ দিয়ে ২০০৩ সালে ইরাক যুদ্ধের পথ তৈরির অন্যতম কারিগর ও প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ আমেরিকান পররাষ্ট্রমন্ত্রী কলিন পাওয়েল আর নেই।
দেশটির ৬৫তম সাবেক এই পররাষ্ট্রমন্ত্রী করোনা পরবর্তী জটিলতায় ৮৪ বছর বয়সে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছেন বলে সোমবার তার পরিবারের এক বিবৃতিতে নিশ্চিত করা হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, তিনি কোভিড-১৯ জটিলতায় মারা গেছেন। করোনাভাইরাসের টিকার পূর্ণ ডোজও নিয়েছিলেন এবং ওয়াল্টার রিড ন্যাশনাল মিলিটারি মেডিক্যাল সেন্টারে চিকিৎসা নেওয়ার পর সেরে উঠেছিলেন তিনি।
করোনা থেকে সুস্থ হয়ে ওঠার পর নানা ধরনের শারীরিক জটিলতা দেখা দেয় পাওয়েলের। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আমরা একজন অসাধারণ এবং প্রেমময় স্বামী, বাবা, দাদা এবং মহান আমেরিকানকে হারিয়েছি।
নিউইয়র্ক টাইমস বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের অনেক প্রথমের জন্ম হয়েছিল কলিন পাওয়েলের হাত ধরে। দেশটির প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ হিসেবে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা, জয়েন্ট চিফ অব স্টাফের চেয়ারম্যান এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি।
নিউইয়র্ক সিটির হারলেমে জ্যামাইকান অভিবাসী পরিবারে জন্ম পাওয়েল বেড়ে উঠেছিলেন সাউথ ব্রঙ্কসে। সিটি কলেজ নিউইয়র্ক থেকে স্নাতক শেষ করে মার্কিন সেনাবাহিনীর রিজার্ভ অফিসার ট্রেইনিং কর্পসের কর্মসূচিতে যোগ দেন। একেবারে তরুণ সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট কর্মকর্তা থেকে কর্মজীবনের শুরু হলেও সামরিক সর্বোচ্চ পদেও আসীন হন তিনি। ভিয়েতনাম যুদ্ধেও জড়িত ছিলেন তিনি।
স্নায়ু যুদ্ধের শেষের দিকে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যানের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার দায়িত্ব পান তিনি। পরে তিনি সোভিয়েত প্রেসিডেন্ট মিখাইল এস গর্বাচেভের সাথে সহযোগিতার এক অধ্যায়ের সূচনা এবং অস্ত্র চুক্তির আলোচনায় সহায়তা করেন।
২০০০ সালে জ্যামাইকান অভিবাসী পরিবারের সন্তান পাওয়েলকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার পর তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ বলেছিলেন, জেনারেল পাওয়েল একজন আমেরিকান বীর, আমেরিকার এক উদাহরণ এবং এক দুর্দান্ত আমেরিকান গল্প।