মধ্যপ্রাচ্যের দুই আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী সৌদি আরব ও ইরানের সঙ্গে দীর্ঘদিন বৈরী সম্পর্ক চলে আসছে। সম্পর্ক জোড়া লাগাতে সম্প্রতি দেশ দুটি চারদফা গোপন বৈঠক করেছে। সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফয়সল বিন ফারহান আল সৌদ রোববার এই তথ্য জানিয়েছেন।
এক সংবাদ সম্মেলনে সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ইরানের সঙ্গে তার দেশের সর্বশেষ বৈঠক হয়েছে গত ২১ সেপ্টেম্বর। তবে কোথায় বৈঠক হয়েছে এবং বৈঠকে কারা প্রতিনিধিত্ব করেছেন তা সব জানাননি তিনি।
আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, রক্ষণশীল প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির নেতৃত্বাধীন ইরানের সঙ্গে উত্তেজনা কমাতে চাইছে সৌদি আরব।
রোববার ইউরোপীয় ইউনিয়নের বৈদেশিক নীতি (ফরেন পলিসি) প্রধান জোসেপ বোরেলের সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ইরানের সঙ্গে আলোচনা এখনো অনুসন্ধানাত্মক পর্যায়ে রয়েছে। তবে ইস্যুসমূহ নিয়ে দুই পক্ষ সামনে এগোতে সক্ষম হবেন বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
দুই সপ্তাহ আগে নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সাইদ খতিবজাদে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, উপসাগরীয় অঞ্চলের নিরাপত্তা নিয়ে সৌদির আরবের সঙ্গে আলোচনায় বেশ অগ্রগতি হয়েছে।
শিয়া সংখ্যাগরিষ্ঠ ইরান ও সুন্নী সৌদি আরব মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে পরস্পরবিরোধী সংঘাতে জড়িত। ২০১৬ সালে দেশ দুটি কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে সৌদি আরবের সর্ববৃহৎ তেল স্থাপনা আরামকোর ওপর ইরান সমর্থিত ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা ড্রোন হামলা করে। ঘটনার পর ‘ইরানের সঙ্গে সংঘাত থাকলে বিপদ’ উপলব্ধি করে সৌদি সরকার তেহরানের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে অগ্রসর হয়।
চলতি বছরের এপ্রিলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে খবর বের হয়, সৌদি আরব গোপনে ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক গড়তে আলোচনা করছে। সৌদি আরবের একজন কর্মকর্তা ওই সময় জানান, ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে বাধ্য হয়েছে রিয়াদ। অন্যদিকে ইরানের কর্মকর্তারা জানান, সৌদি আরবের সঙ্গে তারা উত্তেজনা চান না বরং আঞ্চলিক সব দেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্বের সম্পর্ক চান।