বৃদ্ধ বয়সে পছন্দের মার্কা নৌকায় ভোট দিতে চেয়েছিলেন হাবিব পালোয়ান। সব ধরনের মানসিক প্রস্তুতি সম্পন্ন করে সকাল সকাল ভোট কেন্দ্রে উপস্থিত হন তিনি।
ভোট কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে অনেক খোঁজাখুঁজি আর দৌড়ঝাঁপ করেও নিজের নামটি ভোটার তালিকায় না পেয়ে হতাশ হন তিনি। শেষমেশ জানতে পারেন তিনি মারা গেছেন।
মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়ে তার। সম্মুখীন হন বিব্রতকর পরিস্থিতির। মৃত ব্যক্তি ভোট দিতে এসেছে এমন ঘটনায় অনেকটা হতবাক হয়েছিল ভোট কেন্দ্রে উপস্থিত ব্যক্তি ও সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের দায়িত্ব পালনকারীরাও।
২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার রনগোপালদী ইউনিয়নের গুলি আউলিয়াপুর আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভোট কেন্দ্রে ভোট দিতে গিয়ে এমন পরিস্থিতির শিকার হন হাবিব পালোয়ান (৬২)। তিনি ওই ইউনিয়নের পূর্ব আউলিয়াপুর গ্রামের মৃত রত্তন আলী পালোয়ানের ছেলে। তিনি জীবিত থাকলেও ভোটার হালনাগাদে তিনি মৃত বলে জানিয়ে দেন উপজেলা নির্বাচন অফিস।
হাবিব পালোয়ান বেঁচে থাকলেও সরকারি হিসেবে মৃত তিনি। শুধু তিনি নন। এমন ৮ থেকে ১০ জন ব্যক্তি জীবিত থাকার পরও প্রতিনিয়ত নিজেকে জীবিত প্রমাণে ঘুরছেন নির্বাচন অফিস থেকে শুরু করে বিভিন্ন দপ্তরে।
জীবিত থাকার পরও মৃত হওয়ায় বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন ভুক্তভোগীরা। বঞ্চিত হচ্ছেন রাষ্ট্রের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা থেকে। অনেকে সরকারি বেতন-ভাতা বঞ্চিত হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
জানা যায়, ২০১৫ সালের দিকে ভোটার তথ্য হালনাগাদের সময় ভুল তথ্য দিয়ে ওই সব ব্যক্তিদের মৃত দেখান তথ্য সংগ্রহকারীরা। আর তা যাচাই-বাছাই ছাড়াই তাতে সই-স্বাক্ষর করে দন ভোটার তথ্য হালনাগাদে দায়িত্বে থাকা শনাক্তকারী ও সুপারভাইজাররা।
ভোটার তালিকায় মৃত হাবিব পালোয়ানের ছেলে উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মো. রাসেল পালোয়ান জানান, ভোটার তথ্য হালনাগাদের সময় ভুল তথ্য দিয়ে তার বাবাকে মৃত দেখানো হয়েছে। ভোটার তালিকায় তিনি মৃত হওয়ায় করোনার টিকা পর্যন্ত নিতে পারছেন না। বঞ্চিত হচ্ছেন রাষ্ট্রীয় সেবা থেকে। তিনি দ্রুত তার বাবার ভোটার তথ্য সংশোধনের দাবি জানান।
দশমিনা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান জানান, তিনি আবেদন করেছেন। আবেদন ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। দ্রুত সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।