বরিশাল সদর উপজেলা পরিষদে ইউএনও’র বাস ভবনে হামলা ও পুলিশের সাথে সংঘর্ষের ঘটনায় পৃথক দু’টি নালিশি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। রোববার দুপুর অতিরিক্ত চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ অভিযোগ দায়ের করা হয়।
দায়েরকৃত পৃথক দুটি অভিযোগে প্রধান আসামি করা হয়েছে ইউএনও মুনিবুর রহমানকে। এ দু’টি মামলায় ছয়জন এজাহারভুক্ত এবং অজ্ঞাতনামা ১০০ জনকে আসামি করা হয়। শুনানি শেষে এ বিষয়ে সিদ্ধান্তের জন্য অভিযোগ দু’টি আদালতে রেখে দেয়া হয়।
এদিকে ঘটনার দিন পুলিশ ও প্রশাসনের দায়েরকৃত মামলায় গ্রেপ্তার ২১ আসামির জামিন আবেদন করা হলে তা নামঞ্জুর করেন অতিরিক্ত চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মাসুম বিল্লাহ।
মামলার বাদী বরিশাল সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) প্যানেল মেয়র ও জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম। এ মামলার আসামিরা হলেন- ইউএনও মুনিবুর রহমান, কোতোয়ালি থানার ওসি নুরুল ইসলাম, এসআই শাহ জালাল মল্লিক ও একজন আনসার সদস্য তার নাম উল্লেখ নেই। এ মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ৪০/৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
বাদী তার এজাহারে অভিযোগ আনেন, ঘটনার দিন রাতে বিসিসি কর্মীদের ব্যানার অপসারণ করতে বাধা দেয়া হয় এবং তাদের সাথে ইউএনও ও তার আনসার বাহিনীর সদস্যরা দুর্ব্যবহার করেন। সংবাদ পেয়ে সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ ঘটনাস্থলে ছুটে গেলে আনসার বাহিনীর সদস্যরা শটগান নিয়ে মেয়রকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি ছোড়ে। এ সময় নেতাকর্মীরা মেয়রকে রক্ষা করেন।
একই সময় পুলিশের লাঠিচার্জ এবং গুলি বর্ষণে বহু নেতাকর্মী আহত হয়। এক ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতার একটি চোখ নষ্ট হয়েছে।
এ ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় মামলা দায়ের করতে গেলে গ্রহণ না করায় আদালতে শরণাপন্ন হন বলে এজাহারে উল্লেখ করেন বাদী।
অপর মামলার বাদী হচ্ছেন বিসিসির রাজস্ব কর্মকর্তা বাবুল হাওলাদার। এ মামলায় আসামিরা হলেন- ইউএনও মুনিবুর রহমান ও আনসার সদস্য। এখানেও আনসার সদস্যের কোন নাম নেই। এ মামলায় অজ্ঞাতানামা আরো ৪০/৫০ জন আসামি করা হয়েছে।
বাদী এজাহারে উল্লেখ করেন, ঘটনাস্থলের অবৈধ ব্যানার অপসারণ করতে গেলে ইউএনও বাধা দেন। এর এক পর্যায়ে মেয়র সেখানে উপস্থিত হলে ইউএনও তার আনসার সদস্যদের গুলি করার নির্দেশ দেন। ইতিমধ্যে পুলিশও সেখানে হাজির হয়ে গুলি ছোঁড়ে এবং লাঠিচার্জ করতে থাকে। এতে অনেক মানুষ আহত হয়। এ সময় পুলিশ প্রায় কোটি টাকা মূল্যের একশ’মোটরসাইকেল গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়।
এ ঘটনায় কোতোয়ালি মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ও ইউএনও মুনিবুর রহমানের করা দুই মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে মেয়রকে। মামলার মোট আসামি ৬০২ জন, তাদের মধ্যে এখন পর্যন্ত ২২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।