তালেবানের সশস্ত্র অভিযানের মুখে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন পশ্চিমাসমর্থিত আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গানি। তার মতো ভাইস প্রেসিডেন্ট আমরুল্লাহ সালেহও দেশ ছেড়েছেন বলে খবর ছড়িয়েছিল। তবে সে তথ্য সত্য নয়। এখনও আফগানিস্তানেই রয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন আফগান ভাইস প্রেসিডেন্ট নিজেই। শুধু তা-ই নয়, আশরাফ গানির অবর্তমানে নিজেকে আফগানিস্তানের বৈধ তত্ত্বাবধায়ক প্রেসিডেন্ট বলেও দাবি করেছেন তিনি। খবর আল জাজিরার।
মঙ্গলবার এক টুইটে আমরুল্লাহ সালেহ বলেন, আফগানিস্তানের সংবিধান অনুসারে প্রেসিডেন্টের অবর্তমানে, পালিয়ে গেলে, পদত্যাগ করলে বা মৃত্যু হলে ভাইস প্রেসিডেন্ট তত্ত্বাবধায়ক প্রেসিডেন্ট হয়ে যান। আমি এখনও দেশের ভেতরেই রয়েছি এবং আমিই বৈধ তত্ত্বাবধায়ক প্রেসিডেন্ট। আমি সব নেতার কাছে সহযোগিতা ও সমর্থন চাই।
এর আগে, গত রোববার তালেবানের সশস্ত্র অভিযানের মুখে প্রতিবেশী দেশ তাজিকিস্তানে পালিয়ে যান আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গানি। অবশ্য কিছু গণমাধ্যমের দাবি, তাজিকিস্তান অনুমতি না দেওয়ায় ওমানে গেছেন আশরাফ গানি। তার সঙ্গে স্ত্রী ও ঘনিষ্ঠ সহযোগীরাও আফগানিস্তান ছেড়েছেন বলে শোনা যাচ্ছে।
কাবুলের রুশ দূতাবাস জানিয়েছে, দেশ ছাড়ার সময় চারটি গাড়ি ও একটি হেলিকপ্টারভর্তি নগদ অর্থ নিয়ে পালিয়েছেন আফগান প্রেসিডেন্ট। তার কাছে আরও বিপুল অর্থ ছিল, কিন্তু সেগুলো গাড়ি ও হেলিকপ্টারে না ধরায় ফেলে যেতে হয়েছে।
কাবুলে রুশ দূতাবাসের মুখপাত্র নিকিতা ইশচেঙ্কো বার্তা সংস্থা আরআইএ’কে বলেন, গানি যেভাবে আফগানিস্তান থেকে পালিয়েছেন তা (বিদায়ী) শাসকগোষ্ঠীর পতনের সবচেয়ে স্পষ্ট বৈশিষ্ট্য। চারটি গাড়ি ছিল নগদ অর্থে ভর্তি, তারা এগুলোর আরেকটি অংশ হেলিকপ্টারে তুলতে চেয়েছিল, কিন্তু পুরোটা ধরেনি। কিছু অর্থ রাস্তায় পড়ে ছিল।
রুশ দূতাবাসের এ মুখপাত্র বার্তা সংস্থা রয়টার্সকেও এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। বক্তব্যের সূত্র কী জানতে চাইলে তিনি ‘প্রত্যক্ষদর্শীদের’ কথা জানিয়েছেন।
তালেবানরা কাবুল নিয়ন্ত্রণের দ্বারপ্রান্তে থাকা অবস্থায় রোববার আফগানিস্তান ত্যাগ করেন আফগান প্রেসিডেন্ট। এ জন্য তাকে ‘কাপুরুষ’ মন্তব্য করে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাধারণ আফগান নাগরিকরা।
অবশ্য পরে এক ফেসবুক পোস্টে আশরাফ গানি দাবি করেছেন, রক্তবন্যা এড়াতেই তিনি আফগানিস্তান ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তালেবান যোদ্ধাদের মুখোমুখি হওয়ার পরিস্থিতির বিষয়ে আফগান প্রেসিডেন্ট বলেন, এতে অগণিত দেশবাসী মারা যেত। ধ্বংসের মুখোমুখি হতো কাবুল। লোকদের ওপর হামলা করত তালেবান। তাই রক্তের বন্যা এড়াতে দেশ ছাড়াকেই শ্রেয় মনে করেছি।