বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি আবদুল বাসেত মজুমদার মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। বুধবার (২৭ অক্টোবর) সকাল ৮টার দিকে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও তার ছেলে সাঈদ আহমেদ রাজা।
বাসেত মজুমদার দুই ছেলে ও দুই মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। মৃত্যুর সময় তার বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর। প্রবীণ এই আইনজীবীর জানাজা বেলা ১১টায় বনানী কেন্দ্রীয় মসজিদ, এরপর বাদ জোহর হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকার পর গ্রামের বাড়ি কুমিল্লায় শানিচোঁ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে জানাজা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।
এর আগে ৩০ সেপ্টেম্বর আবদুল বাসেত মজুমদারকে ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে সোমবার (২৫ অক্টোবর) তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। ফুসফুসের জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি।
বাসেত মজুমদার একাধিকবার বার কাউন্সিলের নেতৃত্ব দিয়েছেন। দায়িত্ব পালন করেছেন সুপ্রিম কোর্ট বারের সম্পাদক ও সভাপতি হিসেবে। দুঃস্থ আইনজীবীদের জন্য নিজের নামে ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করেন তিনি। দেশের বিভিন্ন আইনজীবী সমিতিতে এই ফান্ড থেকে অর্থ সহায়তা দেওয়া হয়।
বঙ্গবন্ধু আইনজীবী পরিষদের সাবেক সভাপতি বাসেত মজুমদার বর্তমানে নবগঠিত বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক পদে দায়িত্বপালন করেন।
আইন পেশায় ৫৬ বছরে ধরে নিয়োজিত ‘গরিবের আইনজীবী’ খ্যাত আবদুল বাসেতের জন্ম ১৯৩৮ সালের ১ জানুয়ারি।
কুমিল্লার লাকসাম (লালমাই) উপজেলার শানিচোঁ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তার বাবার নাম আবদুল আজিজ মজুমদার, আর মা জোলেখা বিবি।
স্থানীয় হরিচর হাইস্কুল থেকে ম্যাট্রিক (এসএসসি) এবং কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে আইএ (এইচএসসি) ও বিএ পাস করেন বাসেত মজুমদার। তারপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স ও এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করেন। পরে ১৯৬৬ সালে হাইকোর্টে আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন।
জ্যেষ্ঠ এ আইনজীবীর বড় ছেলে গোলাম মহিউদ্দিন আবদুল কাদের ব্যবসা করেন। ছোট ছেলে সাঈদ আহমেদ রাজা সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী। দুই মেয়ের মধ্যে ফাতেমা আক্তার লুনা রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী। সর্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মিউজিকে পড়াশোনা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করছেন। ছোট মেয়ে খাদিজা আক্তার ঝুমা উত্তরা মেডিক্যাল কলেজের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর।