বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম নিয়ন্ত্রণহীন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন সংগঠন ও দলের পক্ষ থেকে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার অভিযোগে বাণিজ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করা হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে এ ব্যর্থতার দায়ে পদত্যাগ করবেন কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ব্রাজিলের তেলের দাম বাড়ার কারণে যদি আমাকে পদত্যাগ করতে হয় তাহলে সমস্যা নেই।’
শুক্রবার (১৮ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর কারওয়ান বাজার রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নে জবাব দেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ, টিসিবি চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আরিফুল হাসান, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান।
পদত্যাগের বিষয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বাজারের সোনালি মুরগির দাম বেড়েছে, দেখি আর কোন কোন মুরগির দাম বাড়ে। বিষয় হলো, প্রতিদিনই কোনো না কোনো জিনিসের দাম বাড়ে, আবার কমে। এখন গুগলের সার্চ দিলেই পাওয়া যাবে আন্তর্জাতিক বাজারে সয়াবিন তেল, পাম অয়েলের দাম কত। তাই ব্রাজিলে তেলের দাম বাড়ার কারণে যদি আমাকে পদত্যাগ করতে হয়, তাহলে সমস্যা নেই।’
তিনি বলেন, দাম বাড়ে পণ্যের চাহিদা ও সরবরাহের ওপর নির্ভর করে। তেলের দাম বিশ্ব বাজারে বেড়েছে। আগে আমদানির সময় তেলের একটা কন্টেইনারের ভাড়া যেখানে দুই থেকে আড়াই হাজার ডলার লাগতো, এখন তা বেড়ে ১০ হাজার ডলারে উঠেছে। বিশ্ব বাজারে যদি তেলের দাম বেড়ে যায় তাহলে আমাদের কন্ট্রোল করা সম্ভব না। আমাদের নিয়ন্ত্রণে যতটুক আছে আমরা চেষ্টা করছি বাজার ঠিক রাখতে।
মন্ত্রী বলেন, পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে আমাদের ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের মন-মানসিকতা পরিবর্তন করতে হবে। যখন যার যতটুকু প্রয়োজন ততটুকু কিনতে হবে। একসঙ্গে অনেক পণ্য কিনলে বাজারে সরবরাহ-চাহিদার ক্ষেত্রে ঘাটতি সৃষ্টি হয়। এতে করে বাজারে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী সুযোগ নিয়ে পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়। ভোক্তার এক সাপ্তাহে যতটুকু প্রয়োজন ততটুকু কিনলে বাজারের এ বাড়তি চাপ সৃষ্টি হয় না।
জাতীয় ভোক্তা অধিদপ্তর ছোট ছোট ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন অনিয়মের কারণে জরিমানা করে, কিন্তু তেলের মূল্য বাড়ানোর পেছনে যেসব মিল মালিক অনিয়ম করছে তাদের কোন জরিমানা করা হচ্ছে না কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জানান, ইতোমধ্যে প্রায় সবগুলো ভোজ্যতেলের মিলে অভিযান করা হয়েছে, আরেকটি মিল বাকি। আমরা বেশ কিছু অনিয়ম পেয়েছি। অভিযানে বিভিন্ন তথ্য ও সুপারিশ প্রতিবেদন আকারে মন্ত্রণালয়ে পাঠাবো। তাদের পরামর্শ ও নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী সময়ে আমরা পদক্ষেপ নেব।