<< গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিতে বিএনপি চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে : তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী

গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় বিরোধীদল হিসেবে দায়িত্বপালনে বিএনপি ব্যর্থ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।

সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর তোপখানা রোডে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল মিলনায়তনে প্রেস কাউন্সিল দিবসের সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিতে হলে সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টার প্রয়োজন। গণতন্ত্রকে সংহত করা এবং গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে সংহত করা, বহুমাত্রিক সমাজ ব্যবস্থাকে সংহত করা শুধুমাত্র সরকারি দলের দায়িত্ব নয়। এ দায়িত্ব সব রাজনৈতিক দলের এবং যারা বিরোধী রাজনীতি করেন তাদেরও। সেই দায়িত্ব পালন করতে বিএনপি চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে। তারা গণতন্ত্রে ও গণতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থাকে বিশ্বাস করে না বিধায় অতীতে প্রেস কাউন্সিলসহ দেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করার চেষ্টা করেছে।

হাছান মাহমুদ বলেন, আজকে যখন একটি অংশগ্রহণমূলক পদ্ধতির মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, বিএনপি তখন সেটি নিয়ে বিতর্ক তৈরির অপচেষ্টা করছে। তারা যখন দেখলো যে সার্চ কমিটি সমাজের সমস্ত মানুষের সঙ্গে আলোচনা করছে এমনকি তাদের (বিএনপির) পক্ষে যারা কথা বলে তারাও সেখানে আলোচনায় গেছে, তখন মির্জা ফখরুল সাহেবরা হতাশা থেকে হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে বক্তব্য রাখছে।

মন্ত্রী বলেন, বিএনপিকে অনুরোধ জানাবো, সরকারের সমালোচনা না করে তারা বিরোধীদল হিসেবে কতটা ব্যর্থ, তারা তাদের কর্মীদের কাছে কতটা ব্যর্থ, সেটি আয়নায় দেখার জন্য। আসুন সবাই মিলে গণতন্ত্রকে সংহত করি, গণতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থাকে সংহত করি, আমাদের বহুমাত্রিক সমাজ ব্যবস্থাকে সংহত করি।

প্রেস কাউন্সিলের বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা মনে করেন যে আমাদের এই বহুমাত্রিক সমাজ ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের বিকাশে গণমাধ্যমের বিকাশ প্রয়োজন, স্বাধীনতা প্রয়োজন। একইসঙ্গে প্রয়োজন দায়বদ্ধতারও। সেই দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করার জন্যই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু প্রেস কাউন্সিল গঠন করেছেন। প্রেস কাউন্সিল একটি জুডিশিয়াল বোর্ড, এর মুখ্য কাজ হচ্ছে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কিংবা গোষ্ঠী যদি কোনো সংবাদের জন্য সংক্ষুব্ধ হয়, তখন প্রেস কাউন্সিলে অভিযোগ দায়ের করলে কাউন্সিল সেটি নিষ্পত্তি করবে। এছাড়া সাংবাদিকতার নীতিমালা নিয়েও কাউন্সিল কাজ করছে। এই কাউন্সিলকে আরও শক্তিশালী করতে প্রেস কাউন্সিল আইনকে যুগোপযোগী করে মন্ত্রণালয় খসড়াটি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠিয়েছে। এটি পাস হলে কাউন্সিল আরও কার্যকর সেবা দিতে পারবে।

এসময় গণমাধ্যমকর্মী আইন প্রসঙ্গে ড. হাছান বলেন, শ্রম মন্ত্রণালয়, শিল্প মন্ত্রণালয়, আইন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করে বহু কাঠখড় পুড়িয়ে গণমাধ্যমকর্মী আইনের খসড়া তৈরি হয়েছে। পার্লামেন্টে উত্থাপনের পর সেটি কমিটিতে যাবে, কমিটি চাইলে যেকোনো পরিবর্তন করতে পারে, ফেরত পাঠানোরও ক্ষমতা আছে। সাংবাদিকদের কল্যাণবৃদ্ধিতে যেটি দরকার সেটি অবশ্যই করা যাবে।

অনুষ্ঠানে তথ্য ও সম্প্রচার সচিব মো. মকবুল হোসেন বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বলেন, গণমাধ্যমের কল্যাণে প্রেস কাউন্সিলকে আরও শক্তিশালী করার পদক্ষেপ নিয়েছে মন্ত্রণালয়। দেশের জনগণ ও গণমাধ্যম এর সুফল পাবে।

বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. নিজামুল হক নাসিমের সভাপতিত্বে প্রেস কাউন্সিল সদস্য দৈনিক প্রভাত সম্পাদক মুজাফফর হোসেন পল্টু, দ্য ডেইলি অবজারভার সম্পাদক ইকবাল সোবহান চৌধুরী, দৈনিক যুগান্তর সম্পাদক সাইফুল আলম, বিএফইউজের সাবেক সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, বিএফইউজে সভাপতি ওমর ফারুক সভায় বক্তব্য দেন। প্রেস কাউন্সিল সদস্য সেবীকা রানী, ড. উৎপল কুমার সরকার প্রমুখ এসময় উপস্থিত ছিলেন।